সম্পাদকীয় লেখার সুনির্দিষ্ট কোন কাঠামো নেই। তবে কোন বিষয়ের সমাধান দেখাতে হলে প্রথমে সমস্যা বা প্রয়োজনগুলো তুলে ধরে এর সমাধান দিতে হবে। গবেষকদের পরামর্শ হলে দূর্বল যুক্তিগুলো মাঝখানে দিতে হবে। সম্পাদকীয়তে স্থির কোন কাঠামো না থাকলেও মোটামুটি ভাবে তিনটি কাঠামো বিদ্যমান থাকে। এগুলো হলো-
১) সম্পাদকীয় সূচনা
২) ব্যাখ্যা প্রদান
৩) উপসংহার
সম্পাদকীয় সূচনা
অধিকাংশ সময়ে সম্পাদকীয়ের শুরুতে লেখক একটি প্রস্তাবের সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দেন। তারপর ঘটনা বা পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে গভীরে প্রবেশ করতে থাকেন। সংবাদ আকারে যা এসেছে সম্পাদকীয়ের শুরুতে সে তথ্যের সহজ উপস্থাপনও করা হতে পারে। কখনো কখনো পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে ঘটনার পটভূমি তুলে ধরা হয়। সম্পাদকীয়ের শুরু নাটকীয়ও হতে পারে। কোন বড় ও জটিল বিষয়ের ক্ষেত্রে নাটকীয়ের সূচনা কার্যকরী হয়ে থাকে। কিংবা কোন প্রশ্নের মাধ্যমে শুরু করা যেতে পারে।
ব্যাখ্যা প্রদান
সূচনাতে যা বলা হয়নি, এখানে তা বলার চেষ্টা করা হয়। এই অংশটি সম্পাদকীয় লেখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্যকর বা গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ঘটনার অতীত, ইতিহাস পটভূমি ইত্যাদির বর্ণনা উপস্থাপন করে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়।
আরও পড়ুন: জোহারী উইন্ডো মডেল কি? জোহারি উইন্ডো মডেলের সাহায্যে আত্মসচেতনতা ব্যাখ্যা কর।
Alan Weintraut এই অংশটিকে তিনভাগে ভাগ করেছেন। যথা-
ক) প্রথমে বিপরীত পক্ষের মতামত উপস্থাপন
সম্পাদকীয় লেখার সময় বিপক্ষ দলের যুক্তি ও দৃষ্টিভঙ্গি আগে উল্লেখ করতে হবে। বিপক্ষ দলের মানুষকে চিহ্নিত করতে হবে। তাদের মতামত দিতে হবে। তাদের মতামত খন্ডন করার সময় বস্তুনিষ্ঠভাবে ঘটনা ও উদ্ধৃতি উল্লেখ করতে হবে। বিপক্ষের সর্বোৎকৃষ্ট যুক্তিটিই উল্লেখ করতে হবে এবং নিজের সর্বোৎকৃষ্ট যুক্তি দিয়ে খন্ডন করতে হবে।
খ) বিপরীত পক্ষের বিশ্বাস সরাসরি খন্ডন
সম্পাদকীয় লেখককে তার বিপক্ষ দলের যুক্তি ও বিশ্বাস সরাসরি খন্ডনের মাধ্যমে নিজের সঠিক অবস্থান বর্ণনা পেতে হবে। স্বপক্ষে ঘটনা এবং উদ্ধৃতি প্রকাশ করতে হবে। বিপক্ষ দলের কোন একটি যুক্তি সত্য বলে স্বীকার করতে হবে, যাতে লেখকের বক্তব্যগুলো পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
গ) অন্যান্য সাদৃশ্যপূর্ণ যুক্তি উপস্থাপন
লেখক সম্পাদকীয়তে তার পক্ষের সমর্থনের জোরালো থেকে জোরালোতার যুক্তি উপস্থাপন করবেন যাতে তার পক্ষের সকলেই সমর্থন করেন। লেখকের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বুদ্ধিদীপ্ততা প্রকাশ করার জন্য কোন সাহিত্যিক বক্তব্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
উপসংহার
সম্পাদকীয়ের শেষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা বা নির্দেশনা দিয়ে উপসংহার লেখা হয়। সম্পাদকীয়তে উপরের অংশে যা দেয়া আছে তা থেকে আলাদা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলা যেতে পারে। কিভাবে শেষ হবে তা নির্ভর করে কি বিষয়ে সম্পাদকীয় লেখা হচ্ছে তার উপর। কোন অলংকারীক প্রশ্ন উপসংহারে দেয়া যেতে পারে। এবং সর্বশেষ উৎকৃষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া কোন উক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে।