মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে
প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মী তথা মানব সম্পর্কিত বিষয়াদি নিয়ে ব্যবস্থাপনার যে অংশ কাজ করে তা মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হিসেবে পরিচিত। এটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ, তাদের সংগ্রহ, নির্বাচন ও নিয়োগ, উন্নয়ন, কর্মীদের কাজে উদ্বুদ্ধকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণের সাথে সম্পর্কিত। মানব সম্পদ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের চালিকাশক্তি। তাই প্রতিষ্ঠানের এ সম্পদের বাছাই, নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন, বেতন ও মজুরি প্রদান, প্রেষণা ও সুযোগ-সুবিধা দান, কর্মীদের অভাব-অভিযোগ নিরসন, কর্মীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিষয়সমূহ যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পাদন করা হয় তাকে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হিসেবে অভিহিত করা যায়। এটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কর্মসম্পাদন, পরিচালনা নীতি ও পদ্ধতি, মানবীয় কর্মপ্রচেষ্টার নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ এবং উত্তম মানবীয় সম্পর্ক সৃষ্টির প্রয়াসের নীতি ও কর্মসূচির সাথে সম্পৃক্ত।
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে নানাভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নিম্নে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংজ্ঞা প্রদান করা হলো:
David A. Decenzo ও S. P. Robbins-এর মতে, “Human Resource Management (HRM) is concerned with the people dimension in management. It is a process consisting of the acquisition, development, motivation and maintenance of human resource.” অর্থাৎ, ব্যবস্থাপনায় মানব সম্পর্কিত দিক হচ্ছে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা। এটি মানব সম্পদের সংগ্রহ, উন্নয়ন, প্রেষণা ও সংরক্ষণ সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রক্রিয়া।
R. W. Griffin বলেন, “Human Resource Management is the set of organizational activities directed at attracting developing and maintaining an effective workforce.” অর্থাৎ, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে সাংগঠনিক কার্যক্রমে নির্দেশিত একটি ফলপ্রসূ কর্মশক্তির আকর্ষিতকরণ, উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণের সমষ্টি।
Robert Kreitner-এর মতে, “Human Resource Management involve the planning, acquisition and development of human resources necessary for organizational success.” অর্থাৎ, প্রাতিষ্ঠানিক সফলতার জন্য প্রয়োজনীয় মানব সম্পদের পরিকল্পনা, সংগ্রহ এবং উন্নয়নের সাথে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা সম্পৃক্ত।
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে Lawrence A. Apply বলেছেন, “ব্যবস্থাপনা যদি স্বীকার করে যে, ব্যবস্থাপনা মানেই কর্মীদের উন্নয়ন এবং মানব সম্পদের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেয়া, তাহলে ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অনেক সমস্যাই সহজভাবে সমাধান হয়ে যাবে।” তাঁর মতে ব্যবস্থাপনা মানেই কর্মী বা মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা। ব্যবস্থাপনা ও কর্মী বা মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা এক ও অভিন্ন।
- প্রশাসনিক জবাবদিহিতা কি? প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের উপায়সমূহ কি কি?
- বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা ও বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার নীতিমালা – এফ ডব্লিউ টেইলর
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে মানবিক উপাদান। কেননা মানবিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার ছাড়া উন্নত প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির যথার্থ ব্যবহার সম্ভব নয়। আর এ কারণেই আজকাল বিশ্বায়নের প্রবল প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। নিম্নে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব আলোচনা করা হলো:
১) প্রতিষ্ঠানের স্নায়ুতন্ত্র হিসেবে কাজ করে
মানব সম্পদকে প্রতিষ্ঠানের স্নায়ুতন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। কারণ মানবদেহেরে প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্রিয়া-প্রক্রিয়ার জন্য যেমন সুস্থ ও সক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র প্রয়োজন, তেমনি সংগঠনের প্রতিটি বিভাগের সঠিক ও কার্যকর কার্যপ্রক্রিয়া অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার ভূমিকা অপরিহার্য। মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার অনুপস্থিতিতে সংগঠনের কার্যপ্রক্রিয়া সুচারুরুপে সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলেই একে মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
২) উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি
প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের উপকরণসমূহকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার জন্য মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই। এটি কর্মীর কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে তাদের কর্মে আত্মনিয়োগ ও প্রতিষ্ঠানে টিকিয়ে রাখার সকল কার্যক্রম গ্রহণ করে।
৩) অব্যাহত উৎপাদন বজায় রাখা
উৎপাদনের চাকাকে সচল রেখে প্রতিষ্ঠানে উৎপাদনের গতি অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ব্যাপক ব্যবহারের ফলে ব্যবসায় ক্ষেত্রে নানাবিধ প্রতিযোগিতা ও জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমতাবস্থায় এইচআরএম সঠিক কর্মী বাছাই করে তাদের প্রশিক্ষণ, উন্নয়ন ও প্রণোদনাদানের মাধ্যমে কার্যক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে কর্মীদের উৎপাদন কর্মকাণ্ডে সর্বোত্তম অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। এর ফলে শিল্পে উৎপাদনের গতি অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়।
৪) প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন
প্রতিষ্ঠানের মানবিক সম্পদের পরিপূর্ণ ব্যবহার দ্বারা লক্ষ্য অর্জন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। মানব সম্পদের সর্বাধিক উৎকর্ষ সাধন করে এর কাম্য ব্যবহার এবং শ্রমিক-কর্মী ও ব্যবস্থাপনার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে সচল রাখা মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ কার্য। মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কর্মীদের কার্যপন্থা, কার্যপরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে কর্মীদের কাজে আত্মনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করে এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৫) সম্পদের সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও ব্যবহার
প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সম্পদসমূহের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ, তত্ত্বাবধান ও কাম্য ব্যবহারের জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনী প্রয়োজন। দক্ষ কর্মীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও সামগ্রীর উন্নত ব্যবহার ও সংরক্ষণ সম্ভব। আর এরুপ দক্ষ কর্মীবাহিনী গঠনে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
৬) আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
আধুনিক প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিয়ত উদ্ভাবিত হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি ও কলাকৌশল। বর্ধিত উৎপাদনের চাহিদা পূরণে এসব প্রযুক্তি ও কৌশলের ব্যবহার অপরিহার্য। এসব উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও কলাকৌশলের সাথে পরিচিত করে তুলে কর্মীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার কাজ।
৭) আধুনিক প্রতিযোগিতা মোকাবেলা
বিশ্বায়ন আর মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রভাবে উৎপাদন ক্ষেত্রে নানা বৈচিত্র্যতা দেখা দেয়ায় ব্যবসায় জগতে প্রতিষ্ঠানকে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। স্বল্পমূল্যে উন্নতমানের পণ্য ও সেবা সরবরাহ আজকের প্রতিষ্ঠানের সর্বাপেক্ষা বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ, এদের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন এবং সংরক্ষণ করা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য অপরিহার্য। এসব কার্যাদি সুসম্পন্নের জন্যও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে।
৮) দক্ষ জনশক্তি বৃদ্ধি
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের নীতি, কর্মসূচি ও পরিকল্পনার সাথে সংগতি রেখে কর্মীদের নানাবিধ প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ কর্মীবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলে। এভাবে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সাথে নিয়োগ, প্রেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে সারা দেশে দক্ষ কর্মশক্তি গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৯) কর্মী সংক্রান্ত কার্যসম্পাদন
প্রতিষ্ঠানের কর্মী সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য তথা কর্মী নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন, সংরক্ষণ, প্রণোদনাদান, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ ইত্যাদি মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা দক্ষতার সাথে সম্পাদন করে থাকে। এটি কর্মী সংক্রান্ত সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপযুক্ত কর্মীকে উপযুক্ত পদে ও উপযুক্ত সময়ে নিয়োগ করে থাকে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানে কর্মীর কাম্য ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
১০) শ্রম ও উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণ
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে কর্মীর কাজের দক্ষতা ও মান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিষ্ঠানের জনশক্তির কাম্য ব্যবহার নিশ্চত করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সর্বাধিক শ্রম খরচ হ্রাস করে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
১১) সৌহার্দ্যপূর্ণ শ্রম ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক সৃষ্টি
প্রতিষ্ঠানে অব্যাহত উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য উত্তম শিল্প সম্পর্ক অত্যাবশ্যক। মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা শ্রমিকদের ন্যায্য ও যথোপযুক্ত পারিশ্রমিকসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে ব্যবস্থাপনা ও শ্রমিকের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ব্যবস্থাপনার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি এবং শ্রমিক-কর্মীর অসহযোগিতামূলক মনোভাব দূরীকরণে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
১২) মানব সম্পদ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন
প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় মানব সম্পদের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানব সম্পদ পরিকল্পনার মাধ্যমে কাম্য মানব সম্পদের নির্বাচন, নিয়োগ, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। সঠিক কর্মীকে সঠিক স্থানে নিয়োগকল্পে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
১৩) মানব আচরণ ও মানব সম্পর্কের উন্নয়ন
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের মানব আচরণের পরিবর্তন সাধন করে উত্তম মানব সম্পর্ক সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের উত্তম মনোভাব গঠন ও আচার-আচরণ এবং মনোবল ইত্যাদির উন্নয়ন সাধন করে উত্তম মানব সৃষ্টির সহায়ক ভূমিকা পালনে এটি তৎপর থাকে। উত্তম মানবীয় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনের সহায়ক। এটি কার্যসম্পাদনে কর্মীর একাগ্রতা ও আত্মনিয়োগে সহায়তা করে। উচ্চ মনোবল কর্মীর দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠানে আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক উন্নয়ন সহায়তা করে।
১৪) কর্মী প্রেষণা ও কর্মীর স্বতঃস্ফূর্ততা নিশ্চিতকরণ
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের আর্থিক ও অনার্থিক প্রেষণাদানের ব্যবস্থা করে। ফলে কর্মীদের কার্যসম্পাদনের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। প্রেষণা এমন একটি কৌশল যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদের কাজে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করা হয়। মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কর্মরত কর্মীদের নানাভাবে প্রেষণাদানের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে কাজ আদায়করণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
১৫) কার্যসন্তুষ্টি অর্জন
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে কর্মীর দক্ষতার উন্নয়ন ঘটিয়ে কর্মক্ষেত্রে উন্নতি ও যথাযথ পুরস্কার প্রদান এবং কল্যাণকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানে কাজের উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি, যথাযথ প্রণোদনা দান এবং কর্মোদ্যোগ সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মীর কার্যসন্তুষ্টি অর্জনপূর্বক কর্মীকে কার্যসম্পাদনের স্বতঃস্ফূর্ত আত্মনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করে।
১৬) মুক্তবাজার অর্থনীতি ও বিশ্বায়নের প্রভাব
আধুনিক মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রভাবে ব্যবসায় ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত তীব্র প্রতিযোগিতা এবং নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবসায় ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারসহ অধিক দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। এমতাবস্থায় আজ উন্নত বিশ্বের প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া বা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার প্রয়োজনে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার কার্যকর ও সফল প্রয়োগের গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলেছে।
পরিশেষে বলা যায়, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের সুষ্ঠু কার্যপরিবেশ সৃষ্টি, শ্রম কল্যাণমূলক ব্যবস্থা, কাজের শৃঙ্খলা ও উত্তম শিল্প সম্পর্ক স্থাপন করে। কর্মী নির্বাচন, নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও সুষ্ঠু পারিশ্রমিক প্রদানের ব্যবস্থা করে কর্মীদের কার্যসন্তুষ্টি আনয়ন করে; মনোবল উন্নত করে, স্বতঃস্ফুর্ত আত্মনিয়োগ নিশ্চিত করে।