Home » চেকের প্রকারভেদ আলোচনা কর
চেকের প্রকারভেদ আলোচনা

চেকের প্রকারভেদ আলোচনা কর

by TRI

চেকের প্রকারভেদ

ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ব্যাংক ব্যবস্থার উন্নয়নের সাথে সাথে ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রেও ব্যাপকতা ও বৈচিত্র্য এসেছে। মক্কেলের সুবিধার্থে এবং লেনদেন সহজীকরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের চেকের প্রচলন করা হয়। নিচে চেকের প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো-

চেকের প্রকারভেদ

 

১. বাহক চেক

প্রাপকের নামের শেষ ‘অথবা বাহককে’ শব্দটি উল্লেখ করে যে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধের আদেশ দেওয়া হয় তাকে বাহক চেক বলে। এই চেক যেকোনো ব্যক্তি ব্যাংকে উপস্থাপন করে অর্থ উঠাতে পারে বলে এটি তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এই চেকে প্রাপকের নাম উল্লেখ না থাকলেও শুধু ‘বাহককে’ শব্দটি চেকের বৈধতা দেয়। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই এই চেক হস্তান্তর করা যায়।

২. হুকুম চেক

যে চেকের মাধ্যমে প্রাপকের নামের পরে ‘অথবা আদেশ অনুসারে’ কথাটি লিখে ব্যাংককে অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে হুকুম চেক বলে। এক্ষেত্রে একমাত্র চেকে উল্লিখিত ব্যক্তিকেই ব্যাংক টাকা দিয়ে থাকে। অনুমোদন ছাড়া হুকুম চেক হস্তান্তর করা যায় না বলে তুলনামূলকভাবে এই চেক অধিক নিরাপদ।

আরও পড়ুন:   স্মার্ট কার্ড চেক ও স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড ২০২৩ || Smart Card Check

৩. দাগকাটা চেক

বাহক চেক বা হুকুম চেকের উপরে বাম কোণে কিছু লিখে বা না লিখে আড়াআড়িভাবে সমান্তরাল দুটো রেখা অঙ্কন করলে তাকে দাগকাটা চেক বলা হয়। আড়াআড়ি রেখার মাঝখানে ‘এন্ড কোং’, ‘প্রাপক হিসেবে প্রদেয়’, ‘হস্তান্তরযোগ্য নয়’, ‘ব্যাংকের নাম’ ইত্যাদি লেখা থাকে। এই চেকের টাকা আড়াআড়ি রেখায় উল্লিখিত নির্দেশ অনুযায়ী ব্যাংক পরিশোধ করে।

দাগকাটা চেককে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

ক) সাধারণ দাগকাটা চেক

যে দাগকাটা চেকের দুই দাগের মাঝখানে কিছু লেখা থাকে না বা লেখা থাকলেও ‘ব্যাংক’ শব্দটি লেখা থাকে না, তখন তাকে সাধারণ দাগকাটা চেক বলা হয়। প্রাপকের যেকোনো হিসাবে জমা দিয়ে এই চেকের টাকা সংগ্রহ করা হয়।

খ) বিশেষ দাগকাটা চেক

যে দাগকাটা চেকের দুই দাগের মাঝখানে কোনো ব্যাংকের নাম উল্লেখ থাকে, তাকে বিশেষ দাগকাটা চেক বলে। এই ধরনের চেকের অর্থ কেবল দুই দাগের মাঝখানে উল্লিখিত ব্যাংকে বা ব্যাংকের শঅখায় প্রাপকের হিসাবে জমা দিয়ে সংগ্রহ করা হয়।

৪. বিশেষ চেক

বিশেষ কোনো একটি বিষয়ে আমানতকারীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য ব্যাংক যে চেক ইস্যু করে তাকে বিশেষ চেক বলা হয়। নিচে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ চেক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

ক) ভ্রমণকারীর চেক

ভ্রমণকারীর সুবিধার্থে সহজে টাকা পাঠানোর জন্য ব্যাংক এই ধরনের চেক দেয়। নগদ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে ভ্রমণকারী এই চেকের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করতে পারেন।

খ) উপহার চেক

এই ধরনের চেক অনেকটা প্রাইজবন্ডের অনুরূপ। আপনজনদের উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে এই চেক জনপ্রিয় বলে একে উপহার চেক বলা হয়। এই চেকের গ্রাহক ইস্যুকারী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যেকোনো সময় এটি ভাঙাতে পারে।

গ) মার্কেট চেক বা চেক কার্ড

মার্কেট চেক বলতে আধুনিক ব্যাংকিং জগতে বহুল ব্যাবহৃত ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদিকে বোঝানো হয়। এটি সাধারণত কাগজি মুদ্রার বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ঘ) অনুমোদনপ্রাপ্ত চেক

বড় অঙ্কের লেনদেনের ক্ষেত্রে টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তার জন্য চেক লেখার আগে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বা ভারপ্রাপ্ত উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি নেওয়া হলে তাকে অনুমোদনপ্রাপ্ত চেক বলা হয়।

ঙ) বাসি চেক

চেক প্রস্তুতের পর থেকে আইনানুগ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চেকের টাকা তোলা না হলে তাকে বাসি চেক বা বাতিল চেক বলে। সাধারণত যেকোনো চেকের বৈধ মেয়াদকাল ৬ মাস বা ১৮০ দিন পর্যন্ত হয়।

চ) ফাঁকা চেক

যে চেকে আদেষ্টা টাকার অঙ্ক উল্লেখ না করে স্বাক্ষর দেন তাকে ফাঁকা চেক বলা হয়। এই ধরনের চেকে প্রাপক তার প্রয়োজনমতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে নেন।

ছ) হারানো চেক

চেক প্রস্তুতের পর প্রস্তুতকারী বা প্রাপকের কাছ থেকে চেক হারিয়ে বা চুরি হয়ে গেলে তাকে হারানো চেক বলা হয়।

Related Posts