Home » একক ব্যাংক কি? একক ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা ও অসুবিধা
একক ব্যাংক কি

একক ব্যাংক কি? একক ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা ও অসুবিধা

by TRI

একক ব্যাংক কি

একটি মাত্র অফিসের মাধ্যমে যে ব্যাংক তার কাজ পরিচালনা করে তাকে একক ব্যাংক বলে। এ ধরনের ব্যাংকের কার্যক্রম একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে। এধরনের ব্যাংক নিজস্ব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

একক ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে বলে এটিকে স্থানীয় ব্যাংকও বলা হয়। তবে ঐ এলাকার বাইরে অর্থ আদান-প্রদান করতে হলে অন্য কোনো ব্যাংকের সহযোগিতা নিতে হয়। কার্যক্ষেত্র সীমিত ও কাজের পরিমাণ কম হওয়ায় এরূপ ব্যাংকিংকে Micro Banking System ও বলা হয়।

বাংলাদেশে একক ব্যাংকের কোনো অস্তিত্ব নেই। যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এ ব্যাংকের প্রচলন ঘটে।

একক ব্যাংক এর বৈশিষ্ট্য

নিচে একক ব্যাংকের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করা হলো-

১। গঠন: শাখা ব্যাংকের তুলনায় একক ব্যাংক গঠন করা সহজ।

২। মালিকানা: অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর মালিক মাত্র একজন ব্যক্তি হয়ে থাকে। তবে একাধিক ব্যক্তিও এর মালিক হতে পারে।

৩। শাখা: এ ব্যাংকের কোনো শাখা থাকে না। একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে এই ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ব্যবসায় পরিচালনা করে থাকে।

৪। মূলধন: এ ব্যাংকের নিজস্ব মূলধন রয়েছে। একক ব্যাংক অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রায়তন প্রতিষ্ঠান বলে এর খুব বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না।

৫। নিয়ন্ত্রণ: সাধারণত ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হাতেই এর নিয়ন্ত্রণ ভার ন্যস্ত থাকে।

৬। কাজের স্বাধীনতা: একক ব্যাংক নিজ এলাকায় স্বাধীনভাবে ব্যাংকিং কাজ করে থাকে।

৭। ব্যবস্থাপনা: এ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা দক্ষ ও সুষ্ঠু হয়। কারণ অধিকাংশ সিদ্ধান্তই ব্যাংকের মালিক গ্রহণ করেন।

৮। জনগণের আস্থা: স্থানীয়ভাবে গঠিত ও পরিচালিত হয় বলে এটি সহজেই জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

আরও পড়ুন:   ব্যাংক কাকে বলে? ব্যাংক শব্দের উৎপত্তি আলোচনা কর।

একক ব্যাংক এর সুবিধা

কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে একক ব্যাংকগুলো কিছু সুবিধা ভোগ করে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো-

১। দক্ষ ব্যবস্থাপনা

একক ব্যাংকের কাজের পরিধি ক্ষুদ্র হওয়ায় এবং মালিকগণ নিজেই তদারকি করে বলে এ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা তুলনামূলকভাবে দক্ষ হয়।

২। নিয়ন্ত্রণ

এ ব্যাংকের কার্যাবলি এককভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। এ কারণে নির্ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয়।

৩। দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ

একক ব্যাংকের মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিষদ কাছাকাছি অবস্থানের ফলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।

৪। স্বতন্ত্র সত্তা

স্বতন্ত্র অস্তিত্বের কারণে এ ব্যাংক স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।

৫। পরিচালনা ব্যয়

একক ব্যাংকের সংস্থাপন, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা ব্যয় অপেক্ষাকৃত কম। এ কারণে মুনাফা অর্জন বেশি হয়।

৬। এলাকা উন্নয়ন

এ ব্যাংক যে এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সে এলাকার উন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকে।

৭। মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক

একক ব্যাংকের কর্মচারীর সংখ্যা কম হয়। মালিক এবং কর্মচারী একই অফিসে অবস্থান করে তাই উভয় পক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়।

৮। প্রতিযোগিতাহীন

একক ব্যাংকের কোনো শাখা না থাকায় এ ব্যাংকের অভ্যন্তরে কোনো প্রতিযোগিতা হয় না।

৯। ঋণ গ্রহণ সহজ

একটি মাত্র প্রধান অফিসের মাধ্যমে এ ধরনের ব্যাংকের কার্যক্রম করা হয়। তাই এ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া তুলনামূলক সহজ।

একক ব্যাংক এর অসুবিধা

একক ব্যাংকের বিভিন্ন সুবিধার মাঝে প্রকৃতি, গঠন ও ব্যবহারিক দিক থেকে নিম্নলিখিত অসুবিধাগুলো পরিলক্ষিত হয়-

১। সীমাবদ্ধ সম্পদ

সম্পদ ও মূলধনের পরিমাণ কম হওয়ায় বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা দিতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।

২। অদক্ষ ব্যবস্থাপনা

আয়তনে ছোট এবং ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম হওয়ার কারণে বেশি বেতন দিয়ে বাহির থেকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও কর্মচারী নেওয়া সম্ভব হয় না।

৩। অর্থ স্থানান্তর

এ ব্যাংকের কোনো শাখা না থাকায় এর অর্থ স্থানান্তরে বিঘ্ন ঘটে।

৪। মূলধন গঠনে সমস্যা

একটি বিশেষ এলাকায় এ ব্যাংকের কাজের পরিধি সীমাবদ্ধ হওয়ায় এ ব্যাংকের মূলধন গঠনে সমস্যা হয়। সংগৃহীত মূলধনের পরিমাণ সাধারণত কম হয়। এক্ষেত্রে ধার নেওয়ার সম্ভাবনাও থাকে সীমিত।

৫। লাভের পরিমাণ

কোনো শাখা না থাকার কারণে একক ব্যাংকের লাভের পরিমাণ কম হয়।

৬। বিলোপসাধন

এ ব্যাংকের বিলোপসাধন মালিকের ইচ্ছা অনিচ্ছার সাথে জড়িত।

Related Posts