এনজিও
এনজিও (NGO) এর পূর্ণরূপ হলো Non-Government Organization, যার অর্থ বেসরকারি সংস্থা। সাধারণত সরকার দ্বারা পরিচালিত নয় এমন প্রতিষ্ঠানকে এনজিও বলে। যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত, বিদেশি সাহায্যে পরিচালিত নয় এবং যার উদ্দেশ্য অবস্থানরত দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা তাকে NGO বলে।
United Nations প্রদত্ত সংজ্ঞানুযায়ী, “যেকোনো বেসরকারি সংগঠন যা সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেক মুক্ত থেকে মুনাফাবিহীন, সন্ত্রাসবিহীনভাবে অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে তাকে এনজিও বলে।”
দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি NGO কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে কর্মরত এরকম কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা হলো- কেয়ার, সেভ দি চিলড্রেন, অক্সফাম, কারিতাস ইত্যাদি। আবার কতগুলো বেসরকারি সাহায্য সংস্থা কাজ করছে, যা বিদেশি তহবিলপুষ্ট; যেমন- ব্র্যাক, প্রশিকা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ইত্যাদি।
এনজিও এর ভূমিকা
সরকারের পাশাপাশি এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য এ প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এনজিওদের ভূমিকাগুলো নিম্নরূপ-
⇒ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন- বন্যা, খরা, নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ইত্যাদি আমাদের অর্থনীতিতে মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে। NGO প্রতিষ্ঠানগুলো এসব দুর্যোগকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, উদ্ধারকাজে সহায়তা ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থাগুলো কাজ করে যাচ্ছে।
⇒ দেশে নিরক্ষর মুক্ত জাতি গঠনে এনজিও শিশু ও বয়স্ক শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
⇒ গ্রামের ভূমিহীন ও দরিদ্র মানুষের মাঝে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে।
⇒ দেশে অতিরিক্ত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন NGO কাজ করছে। বিভিন্নভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে শিক্ষাদান এবং সচেতন করছে।
⇒ NGO প্রতিষ্ঠানগুলো নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছে। এসব প্রতিষ্ঠান অশিক্ষিত নারীসমাজকে সংগঠিত করে তাদেরকে ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছে।
⇒ শিক্ষিত বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ এবং ঋণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করছে যা দেশে বেকার সমস্যা হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
⇒ কৃষকদের ঋণ বিতরণ, বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ, সেচ সম্প্রসারণ ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এনজিওগুলো ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন: চলতি মূলধন কাকে বলে? চলতি মূলধনের উৎসগুলো কি কি?
এনজিও এর প্রকারভেদ
এনজিও গুলোকে বিভিন্নভাবে শ্রেণিবিভাগ করা যায়।
প্রথমত: কাজের উপর ভিত্তি করে-
১. পেশাগত NGO
২. ক্ষমতায়নভিত্তিক NGO
দ্বিতীয়ত: মালিকানার ভিত্তিতে-
১. কমিউনিটিভিত্তিক NGO
২. শহরভিত্তিক NGO
৩. জাতীয় NGO
তৃতীয়ত: কর্ম-অঞ্চলের ভিত্তিতে-
১. স্থানীয় NGO
২. আঞ্চলিক NGO
৩. জাতীয় NGO
৪. আন্তর্জাতিক NGO