শিল্পের বৈশিষ্ট্য
যে প্রক্রিয়া বা কর্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং বিভিন্ন উপায়ে ও পর্যাযে রূপগত উপযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্য উৎপাদন করা হয় তাকে শিল্প বলে। শিল্পের যেসব বৈশিষ্ট্য লক্ষ্যণীয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো-
১. উৎপাদনকারী শাখা
শিল্প হলো ব্যবসায়ের উৎপাদনকারী শাখা। অর্থাৎ ক্রেতা বা ভোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী উৎপাদন করাই শিল্পের কাজ। সবশ্রেণির মানুষ সাবান ব্যবহার করে। কাঁচামাল ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে যেই প্রতিষ্ঠান সাবান উৎপন্ন করছে সেটাই সাবান প্রস্তুতকারী শিল্প। অর্থাৎ সাবান ব্যবসায়ে সাবান শিল্প উৎপাদনের বাহন হিসেবে গণ্য।
২. রূপগত উপযোগ সৃষ্টি
শিল্প ব্যবসায়র ক্ষেত্রে মূলত রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করে। বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে তা থেক কাঠ চোরাই করা হচ্ছে। তা থেকে আসবাবপত্র তৈরি হচ্ছে। কাঠ চোরাইয়ের মাধ্যমে যেমনি কাঠের রূপ পরিবর্তন হয়েছে তেমনি আসবাবপত্র তৈরির মাধ্যমেও কাঠের পরিবর্তন এসেছে। এক্ষেত্রে দুটোই শিল্পকর্ম।
আরও পড়ুন: শিল্পের কাজকে কেন্দ্রীভূত কাজ বলা হয় কেন?
৩. কেন্দ্রীভূত কর্ম
ব্যবসায়ের উৎপাদনকারী এ শাখার কর্ম সাধারণত নির্দিষ্ট স্থানে কেন্দ্রীভূত থাকে। একটা ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় বা বাজারজাতকরণ কাজ দেশে-বিদেশে বিস্তৃত হতে পারে। কিন্তু এর উৎপাদন কার্য দেখা যাবে একটা নির্দিষ্ট স্থানে কেন্দ্রীভূত। এখান থেকে পণ্য উৎপাদিত হয়ে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তা ক্রেতা বা ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছায়।
৪. অধিক পুঁজি ও ঝুঁকি সংশ্লিষ্ট
কুটির শিল্প বাদ দিলে দেখা যাবে সকল ধরনের শিল্পেই কম-বেশি অধিক মূলধন বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে পুঁজি বেশি বিনিয়োগ হওয়ায় ঝুঁকিও বেশি থাকে।
৫. ফললাভে বিলম্ব
যে কোনো শিল্প গড়তে যথেষ্ট সময় ও প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। কাঁচামাল, শ্রমিক, যন্ত্রপাতিসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ যোগাড়ে সময় লাগে। এরপর পণ্য উৎপাদন করলেই লাভ আসে না। বিক্রয়কে একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পর উৎপাদনকারী লাভের মুখ দেখে। শিল্প যত বড় হয় ফললাভে তত বিলম্ব হয়। অবশ্য দেরি হলেও এর ফল বেশি ও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
৬. অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবেশপথ
যে কোনো দেশেই অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবেশপথ বা তোরণ হল শিল্প। কৃষি অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ খাত হলেও শিল্পের উন্নয়ন ছাড়া কৃষিকে এগিয়ে নেয়াও সম্ভব হয় না। বাংলাদেশে জুস প্রস্তুত শিল্প ব্যাপকভাবে গড়ে না উঠায় আম, আনারসসহ সম্ভানাময় কৃষিক্ষেত্র কাজে আসছে না। শিল্পের প্রসার ঘটলেই দেশের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত হয়।