একটি সুন্দর ফিচার লেখার জন্য ফিচারের কিছু উদ্দেশ্য পূরণ করতে হয়। সার্থক ফিচার লেখার কায়দাকানুন আয়ত্তে না থাকলে পাঠকমহল ফিচার পড়ে তৃপ্তি পান না। Feature এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে Helen M. Patterson তাঁর “Writing and Selling Feature Articles” গ্রন্থে বলেন- “The feature article not only inform, but instructs, guides or entertains.”
অর্থাৎ ফিচার শুধুমাত্র তথ্যই দেয় না। বরং, দিক নির্দেশনা ও বিনোদনও দেয়।
ফিচারের উদ্দেশ্য
ফিচারের ৩টি প্রধান উদ্দেশ্য রয়েছে। যথা-
১) অবহিত করা (to inform),
২) শিক্ষাদান করা বা পথ প্রদর্শন করা (to instruct),
৩) বিনোদন প্রদান করা (to entertain)
নিম্নে ফিচারের উদ্দেশ্যগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
১) অবহিত করা (to inform)
ফিচার মানুষকে একটি বিষয় সম্পর্কে আদ্যোপান্ত জানতে সাহায্য করে। এক্সক্লুসিভ তথ্যাদি প্রদান করে, তবে কাঠখোট্টাভাবে নয়। একটু আনন্দ কিংবা বেদনা অথবা দুঃখ নিয়ে তথ্যাদি উপস্থাপন করে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন দাঁড়ায়, আমি কতটুকু পাঠককে জানাবো? কিংবা আমার পাঠক কারা?
এই ক্ষেত্রে প্রথমেই পাঠক নির্ধারণ করতে হবে। যদি কোন রোগ নিয়ে লিখি, যেমন- ডায়াবেটিস রোগী, তাহলে আমার পাঠক হবেন তারা যাদের স্বাস্থ্য একটু মোটা।
আরও পড়ুন: ফিচার কি? সংবাদ ও ফিচারের মধ্যে পার্থক্য কি কি?
এরপর আমাকে জানতে হবে আমি কতটুকু জানাবো? আমরা জানি, ডায়াবেটিস মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তাই বলে ডায়াবেটিসের ভয়ংকর চিত্র ফুটিয়ে তোলা যাবে না। নয়ত সবার আগেই পাঠক মরে যাবেন। এই ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায় শেখাতে হবে। অথবা বলতে হবে ডায়াবেটিস হলে আপনি কি করবেন!!!
২) শিক্ষাদান করা (to inform)
ফিচারের দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হলো পাঠককে শিক্ষাদান করা বা পথপ্রদর্শন করা। শুধু তথ্যাদি উপস্থাপন করলেই শিক্ষাদান হয়ে উঠে না। এই ক্ষেত্রে দুইটা বিষয় গুরুত্ব দিতে হবে।
ক) বাস্তবসম্মত ধারণা প্রদান করতে হবে। পাঠককে শিক্ষা দেওয়া হবে সবই বাস্তবতার সাথে মিল রেখে। অলিক কোন শিক্ষা হতে পারে না। যেমন-
“চোখের যত্নে আপনি কী করবেন?”
এখানে পাঠককে কীভাবে চোখ পরিষ্কার রাখতে হয় সে ব্যাপারে শিক্ষা দেয়া হয়। বাস্তবসম্মত ধারণা বলতে মূলত পাঠককে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া।
খ) পরামর্শমূলক- পাঠককে পরামর্শ দেয়া যেতে পারে। কোন বিষয়ে সতর্ক থাকলে পাঠক রোগের হাত থেকে বেঁচে যেতে পারেন, সেসব বিষয়ে আলোচনা রকা যেতে পারে। যেমন-
“হৃদরোগ এড়ানোর উপায় কী?”
৩) বিনোদন প্রদান করা (to entertain)
বলা হয়ে থাকে, সংবাদ কঙ্কালের মত আর ফিচার হলো তার রক্তমাংস। একটি বিষয়ে তথ্য প্রদান ও শিক্ষাদানের পর যেটুকু রসবোধ বাকি থাকে তাই বিনোদন। তাই ফিচারের তৃতীয় ও অন্যতম উদ্দেশ্য হলো পাঠককে বিনোদন প্রদান করা। এই ক্ষেত্রে পাঠককে নির্ভেজাল আনন্দ প্রদান করতে হবে।
নির্ভেজাল আনন্দ বলতে পাঠকের স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দের কথা বলা হয়েছে। যে আনন্দ প্রকাশে বাধ্য করা হয় তাই ভেজাল আনন্দ। যেমন- “অপছন্দনীয় শিক্ষককেও সালাম করা।”
কিন্তু আমরা যে শিক্ষককে পছন্দ করি, তাকে হাসিমুখেই সালাম দিয়ে থাকি।
ফিচারের ক্ষেত্রে এমন হবে যে, ফিচারটি পড়েই পাঠকের নিজেকে ধরে রাখা সম্ভব হবে না। সারাক্ষণ ফিচারের বিষয়টি মাথায় ঘুরপাক খাবে। পাঠককে এক প্রকার ঘোরের মধ্যে রাখবে।