Home » অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক কি কি?
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক

অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক কি কি?

by TRI

অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক

কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে কিংবা হচ্ছে কি না তা পরিমাপ করার জন্য অর্থনীতির অভ্যন্তরে যে সব চলককে বিবেচনা করা হয় সেগুলোকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক বা মাপকাঠি বা নির্দেশক বলা হয়। নিচে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১। প্রকৃত জাতীয় আয় : প্রকৃত জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান মাপকাঠি। জাতীয় আয়ের পরিমাণ যতবেশি হয় একটি দেশ ততবেশি উন্নত বলে ধরা হয়। যে পদ্ধতির মাধ্যমে দীর্ঘকালে প্রকৃত

২। প্রকৃত মাথাপিছু আয় : মাথাপিছু জাতীয় আয় দ্বারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরমাপ করা যায়। তাই কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক হিসেবে প্রকৃত জাতীয় আয়কে চিহ্নিত করেছেন।

৩। আয় বণ্টন : জাতীয় আয়ের বণ্টনকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে গণ্য করা হয়।

৪। পণ্য ও সেবার ভোগ : উন্নত দেশে পণ্য ও সেবার ভোগের পরিমাণ ও গুণগত মান বেশি হয়। কিন্তু অনুন্নত দেশের পণ্য ও সেবার ভোগের পরিমাণ ও মান কম হয়।

৫। আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো : যে দেশের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামোগত দিক যত বেশি উন্নত সে দেশ অর্থনৈতিকভাবে তত উন্নত। যেমন : শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, গ্যাসক্ষেত্রে দেশ উন্নত হলে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হবে।

৬। উৎপাদন কৌশল এবং প্রযুক্তি : উৎপাদন কৌশলের উন্নয়ন, নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার এবং এর ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম সূচক/মাপকাঠি।

৭। মানবসম্পদ উন্নয়ন : উন্নত শিক্ষা, ভালো খাদ্য, চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণের দ্বারা জনগণ দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। তাই মানবসম্পদের উন্নয়ন একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান সূচক।

৮ । নাগরিক সুবিধা : যে দেশের মানুষ কথা বলার অধিকার, মতপ্রকাশের অধিকার, তথ্য জানার অধিকার, মানবাধিকার, অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের মতো সব নাগরিক সুবিধা ভোগ করে, সে দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত।

৯। উন্নতমানের আইন-শৃঙ্খলা : বিশ্বের সকল উন্নত দেশের আইন-শৃঙ্খলা উন্নতমানের। পক্ষান্তরে, অনুন্নত দেশের আইনশৃঙ্খলা নিম্নমানের হয়।

১০। উন্নত পরিবেশ : উন্নত দেশের পরিবেশ দ্বারা বুঝা যায় দেশটি অর্থনৈতিকভাবে উন্নত। যেমন : সিঙ্গাপুর। সে দেশে শব্দ দূষণ, পানি দূষণ, বায়ু দূষণ নেই।

১১। শহর-নগর-গ্রামের পার্থক্য : শহর-নগর-গ্রামের সুযোগ সুবিধার পার্থক্য দ্বারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিমাপ করা যায়। কারণ, উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের পার্থক্য নেই। সব এলাকার জনগণ সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে। পক্ষান্তরে, অনুন্নত দেশের এ পার্থক্য অত্যন্ত প্রকট।

১২। সামাজিক নিরাপত্তা : যে দেশে সামাজিক নিরাপত্তা যত বেশি সে দেশ অর্থনৈতিকভাবে তত উন্নত বলে বিবেচনা করা হয়।

১৩। জীবনযাত্রার মান : অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশের মানুষ উন্নত জীবনযাপন করে। জীবনের সকল মৌলিক চাহিদা তারা পূরণ করতে পারে।

১৪। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা : যে সব দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে সে সব দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হয়। অনুন্নত দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করে।

১৫। প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা : রাষ্ট্র ও সামাজিক জীবনে সকল ক্ষেত্রে প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা যত উন্নত হয় একটি দেশ অর্থনৈতিকভাবে তত উন্নত হয়। অন্যদিকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা থাকলে একটি দেশ অর্থনৈতিকভাবে অনুন্নত হয়।

১৬। পুঁজি উৎপাদন অনুপাত : এ মাপকাঠি অনুযায়ী যে দেশে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় শ্রমের তুলনায় পুঁজির অনুপাত বেশি সে দেশ উন্নত।

এছাড়াও পানি ও বিদ্যুতের ব্যবহার, গাড়ির ব্যবহার, উন্নত মনমানসিকতা, টেলিফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার, আচার-ব্যবহার, পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা, পুষ্টি গ্রহণ, ভালো স্বাস্থ্য, শ্রমের মর্যাদা ইত্যাদি সূচকের সাহায্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিমাপ করা যায়।

আরও পড়ুন:

অর্থনৈতিক উন্নয়ন কি? অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কি? অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পার্থক্য

মাথাপিছু আয় কি? মাথাপিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির উপায়সমূহ

 

Related Posts