পে অর্ডার কি ?
যে দলিলের মাধ্যমে ব্যাংকের কোনো একটি শাখা এর প্রাপককে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় তাকে পে অর্ডার বা পেমেন্ট অর্ডার বলে। ব্যাংকের যে শাখা এটি ইস্যু করে সে শাখা থেকেই অর্থ পরিশোধ করা হয়। এটি হস্তান্তর অযোগ্য দলিল। এতে উল্লেখিত পক্ষ ছাড়া অন্য কেউ এর প্রাপক হয় না।
পে অর্ডার থেকে ব্যাংক তুলনামুলকভাবে কম কমিশন আদায় করে। এটি কেবল দেশের অভ্যন্তরে এবং একই নিকাশঘর এলাকায় কার্যকর হয়। এই দলিলের দু’টি পক্ষ; যথা- প্রস্তুতকারী ও প্রাপক।
পে অর্ডারের বৈশিষ্ট্য
পে অর্ডারের বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ-
- পেঅর্ডার নগদ অর্থের মতো লেনদেন যোগ্য।
- পে-অর্ডারকে দাগকাটাও করা যায়।
- দাগকাটা পে অর্ডারের টাকা প্রাপক ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পায়।
- সাধারণত পে অর্ডারের আদেষ্টা ও আদিষ্ট একই ব্যাংকের শাখা হয়ে থাকে।
- পেঅর্ডার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার কোনো ঝুঁকি থাকে না।
আরও পড়ুন: নিকাশ ঘর কি? নিকাশ ঘরের গুরত্ব আলোচনা কর।
ব্যাংক ড্রাফট ও পে অর্ডারের মধ্যে পার্থক্য
ব্যাংক ড্রাফট ও পে-অর্ডার দুটি দলিলই ব্যাংকের সাথে সম্পৃক্ত হলেও এদের মাঝে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। নিচে এসব পার্থক্য তুলে ধরা হলো-
পার্থক্যের বিষয় | ব্যাংক ড্রাফট | পে অর্ডার |
১. হস্তান্তরযোগ্যতা | এটি হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল। | এটি হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল নয়। |
২. পক্ষ | এর পক্ষ প্রধানত ৩টি; যথা: প্রস্তুতকারী, প্রাপক ও প্রদানকারী। | এর পক্ষ প্রধানত ২টি; যথা: প্রস্তুতকারী ও প্রাপক। |
৩. কার্যক্ষেত্র | দেশে-বিদেশে সর্বত্র এ ড্রাফট বিশেষভাবে প্রচলিত। | কেবল একই নিকাশঘরের অধীনে দেশের মধ্যে পে-অর্ডার কার্যকর হয়। |
৪. গুরুত্ব | দেশে-বিদেশ ব্যবহৃত হয় বলে এটির গুরুত্ব অপেক্ষাকৃত বেশি। | একই নিকাশঘরের অধীনে হওয়ায় এর ব্যবহারিক গুরুত্ব অপেক্ষাকৃত কম। |
৫. প্রাপক | হস্তান্তরযোগ্য হওয়ায় নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়াও অন্য কেউ প্রাপক হতে পারে। | অ-হস্তান্তরযোগ্য দলিল বিধায় উল্লিখিত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ প্রাপক হতে পারে না। |
৬. আদেষ্টা ও আদিষ্ট | একই ব্যাংক অথবা ভিন্ন ব্যাংকের ওপর ইস্যু করা হয় বলে আদেষ্টা ও আদিষ্টা ভিন্ন ব্যাংক হয়। | একই নিকাশঘরের অধীনে একই ব্যাংকে লেনদেন সম্পন্ন হয় বলে আদেষ্ট ও আদিষ্ট একই ব্যাংকের শাখা হয়ে থাকে। |
৭. ধরন | ব্যাংক ড্রাফট প্রধানত দুই ধরনের; যথা: দেশি ও বিদেশি ব্যাংক ড্রাফট। | পে-অর্ডার এর কোনো শ্রেণিবিভাগ নেই। |
৮. কমিশন | এর ওপর সাধারণত বেশি হারে কমিশন ধার্য করা হয়। | এক্ষেত্রে কম হারে কমিশন ধার্য করা হয়। |
৯. সর্বজনীনতা | ড্রাফটের ব্যবহার ব্যাপক বলে এটি সর্বজনীন এবং অধিক গ্রহণযোগ্য। | পে-অর্ডারের ব্যবহার কম বলে গ্রহণযোগ্যতাও কম। |