Home » অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র নমুনা
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র নমুনা

অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র নমুনা

by TRI

আমরা জানি, অংশীদারি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে চুক্তিপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা ভবিষ্যৎ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখে। আজ এই আর্টিকেলে একটি অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র নমুনা সম্পর্কে জানবো, যাতে যে কেউ সহজে এই ধরনের চুক্তিপত্র তৈরি করতে পারে।

অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র নমুনা

অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র নমুনা

অদ্য ১ জুন, ২০২২ মোতাবেক বুধবার সকাল ১০ (দশ) ঘটিকার সময় উপরোক্ত পক্ষসমূহের মধ্যে ‘মেসার্স সুমন ট্রেডিং কোং’ নামক অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের নিমিত্তে অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তিপত্রটি প্রস্তুত ও স্বাক্ষরিত হলো। চুক্তির অন্তর্ভুক্ত সকল পক্ষসমূহ সাবালক এবং চুক্তি সম্পাদনের যোগ্যতাসম্পন্ন। প্রত্যেকেই জন্মসূত্রে __________ এবং ধর্মত  ___________।

চুক্তির বিষয় ও শর্তাবলি নিম্নরূপ-

১. প্রতিষ্ঠানের নাম : মেসার্স সুমন ট্রেডিং কোং

২. প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা : বর্তমানে নবাবপুর রোড, ঢাকা প্রধান কর্মস্থলের ঠিকানা হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রয়োজনে পরবর্তী সময়ে সকল অংশীদারের সম্মতিক্রমে ঠিকানা পরিবর্তন করা যাবে।

৩. ব্যবসায়ের কার্যসীমানা : সমগ্র বাংলাদেশ হবে এ প্রতিষ্ঠানের কর্মক্ষেত্র। প্রয়োজনে দেশের যেকোনা স্থানে শাখা অফিস প্রতিষ্ঠা করা যাবে।

আরও পড়ুন:   অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র কি? এ চুক্তিপত্রে কি কি বিষয় থাকা উচিত?

৪. উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি : বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আমদানি, বিক্রয় ও সরবরাহ কার্যে লিপ্ত থাকবে এবং ভবিষ্যতে সকল অংশীদারের সম্মতিক্রমে অন্য যেকোনো আইনসম্মত ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবে।

৫. মূলধন : আপাতত ব্যবসায়ের মোট মূলধন হবে সত্তর লাখ টাকা। যা অংশীদাররা সমানভাবে কার্যারম্ভের ৭ (সাত) দিনের মধ্যে সরবরাহ করবে। ভবিষ্যৎ প্রয়োজনে অংশীদারগণের নিকট হতে অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহ করা যাবে।

৬. অর্থ উত্তোলন : প্রত্যেক অংশীদার নিজ প্রয়োজনে ব্যবসায় হতে মাসিক সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা উত্তোলন করতে পারবে।

(অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র নমুনা)

৭. উত্তোলনের ওপর সুদ : উত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক ১০% হারে সুদ ধার্য করা হবে।

৮. লাভ-ক্ষতি বণ্টন হার : প্রত্যেক অংশীদার প্রদত্ত মূলধন অনুপাতে লাভ-ক্ষতি ভোগ করবে।

৯. ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা : সকল অংশীদার ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। তবে প্রথম পক্ষ নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

১০. পারিশ্রমিক : ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রথম পক্ষকে মাসিক পনের হাজার টাকা বেতন দেয়া হবে। দ্বিতীয় পক্খ মাসিক পাঁচ হাজার টাকা ব্যবসায় হতে সম্মানী হিসেবে পাবে।

১১. ব্যাংকের নাম : সোনালী ব্যাংক, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখা, ঢাকা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করবে এবং সেখানে প্রতিষ্ঠানের নামে একটি চলতি হিসাব খোলা হবে।

১২. ব্যাংকের হিসাব পরিচালনা : প্রথম পক্ষ ও দ্বিতীয় পক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হবে।

১৩. চুক্তি ও কাগজপত্রে স্বাক্ষর দান : প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তি ও কাগজপত্রে স্বাক্ষর করার দায়িত্ব প্রথম ও দ্বিতীয় পক্ষের ওপর যৌথভাবে ন্যস্ত থাকবে।

১৪. কার্যারম্ভ : চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হওয়ার দিন থেকে ব্যবসায়ের কাজ শুরু হয়েছে ধরা হবে।

১৫. চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ : প্রতি বছর ৩১ শে ডিসেম্বর বা তার পরবর্তী সময়ে এক মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক চূড়ান্ত হিসাব তৈরি ও প্রয়োজনীয় নিরীক্ষা সাপেক্ষে অংশীদারদের সভায় পেশ করতে হবে।

১৬. হিসাবকাল : জানুয়ারি হতে ডিসেম্বর, প্রতিষ্ঠানের হিসাবকাল হিসেবে গণ্য হবে।

১৭. নতুন অংশীদার গ্রহণ : প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থে সকল পক্ষের সম্মতিক্রমে প্রয়োজনবোধে নতুন অংশীদার গ্রহণ করা যাবে।

১৮. অংশীদারের অবসর গ্রহণ : তিন মাসের নোটিশে কোনো অংশীদার ব্যবসায় হতে অবসর গ্রহণ করতে পারবে।

(অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র নমুনা)

১৯. অংশীদারের মৃত্যু : কোনো অংশীদারের মৃত্যু হলে তার মনোনীত ব্যক্তি অথবা মনোনীত ব্যক্তি না থাকলে মৃত অংশীদারের উত্তরাধিকারগণ জীবিত অংশীদারদে মতামতের ভিত্তিতে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ব্যবসায় চালাতে পারবে। অন্যথায় তার পাওনা পরিশোধ করা হবে।

২০. পাওনা পরিশোধ পদ্ধতি : অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে বা কোনো অংশীদারের মৃত্যুর বেলায় উক্ত অংশীদারের পাওনা পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে নির্ধারণ ও পরবর্তী তিন মাসে সমান তিন কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে।

২১. সুনাম মূল্যায়ন : উপযুক্ত মূল্যায়নের ভিত্তিতে সুনামের পরিমাণ নির্ণীত হবে।

২২. সমস্যা নিরসন : অংশীদারদের মধ্যে কোনো বিষয়ে সমস্যা দেখা দিলে অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র অনুসারে অন্যথায় দেশের প্রচলিত অংশীদারি আইন অনুযায় তা মিটানো হবে।

২৩. বিলোপসাধন : কোনো কারণে ব্যবসায়ের বিলোপসাধন প্রয়োজন মনে হলে বাংলাদেশে বহাল ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুযায়ী তা সম্পাদন করা হবে।

২৪. শর্তের পরিবর্তন : সকল পক্ষের সম্মতিক্রমে যেকোনো ধারার আইনানুগ পরিবর্তন করা যাবে।

আমরা চুক্তিপত্রের উপরোক্ত ধারাসমূহ গ্রহণ ও তা পালনের প্রতিশ্রুতি প্রদানপূর্বক, স্বেচ্ছায়, সুস্থ শরীরে ও সজ্ঞানে অংশীদার হিসেবে অদ্য ১ জুন, ২০২২ মোতাবেক বুধবার সকাল দশটায় নিম্নোক্ত সাক্ষীগণের সামনে চুক্তিপত্রে দস্তখত প্রদান করলাম।

সাক্ষীগণের স্বাক্ষর                                                                        অংশীদারগণের স্বাক্ষর

১.                                                                                                         ১.

২.                                                                                                         ২.

৩.                                                                                                         ৩.

Related Posts