চাহিদার নির্ধারক সমূহ
যেসব বিষয় বা অবস্থা একটি দ্রব্যের চাহিদাকে প্রভাবিত করে সেগুলোকে একত্রে চাহিদার নির্ধারক বলে। কোন দ্রব্যের চাহিদা বাড়বে, না কমবে, না স্থির থাকবে তা চাহিদার নির্ধারক সমূহ দ্বারা নির্ধারিত হয়।
নিচে চাহিদার নির্ধারক সমূহ আলোচনা করা হল-
আলোচ্য দ্রব্যের দাম
দ্রব্যের নিজ দামের উপর চাহিদার পরিমাণ বহুলাংশে নির্ভর করে। দ্রব্যের নজি দাম কমলে তার চাহিদা বাড়ে এবং দাম বাড়লে চাহিদা কমে।
বিকল্প দ্রব্যের দাম
বিকল্প দ্রব্যের দাম চাহিদাকে প্রভাবিত করে। যেমন- গুড় ও চিনির ক্ষেত্রে গুড়ের দাম কমে গেলে লোকে চিনির বদলে গুড় বেশি ক্রয় করবে বলে চিনির চাহিদা কমে যায়।
পরিপূরক দ্রব্যের দাম
কোন দ্রব্যের পরিপূরক দ্রব্যের দাম পরিবর্তিত হলে তার চাহিদা বাড়ে বা কমে। যেমন- উচ্চমানের তামাকের দাম কমলে পাইপের চাহিদা বাড়ে।
ক্রেতার রুচি ও অভ্যাস
ক্রেতার রুচি ও অভ্যাস পরিবর্তিত হলে চাহিদা প্রভাবিত হয়। কোন কারণে রুচির পরিবর্তন ঘটলে আলোচ্য দ্রব্যটি ভোক্তার কাছে বেশি পছন্দনীয় হয়ে উঠলে তার চাহিদা বাড়ে।
আরও পড়ুন: যোগান ও সময়ের মধ্যে সম্পর্ক
ক্রেতার আয়
চাহিদা নির্ধারণকারী বিষয়গুলোর মধ্যে আয় অন্যতম। আয় বাড়লে সাধারণত ক্রেতারা বেশি ক্রয় করে এবং আয় কমলে কম ক্রয় করে।
জনসংখ্যার পরিবর্তন
দেশে জনসংখ্যা বাড়লে ক্রেতার সংখ্যা বাড়ে। ফলে নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যের চাহিদা বাড়ে।
ঋতু পরিবর্তন
ঋতু পরিবর্তনের ফলে চাহিদা প্রভাবিত হয়। গরমের দিনে বৈদ্যুতিক পাখা এবং শীতের দিনে গরম কাপড়ের চাহিদা বাড়ে।
সম্পদ বণ্টনে পরিবর্তন
সম্পদ বণ্টন ব্যবস্থাও চাহিদাকে প্রভাবিত করে। সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন হলে মানুষের মৌলিক ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর চাহিদা বাড়ে।
সঞ্চয়
সঞ্চয়ের প্রবণতা বাড়লে চাহিদার প্রবণতা কমে। আবার সঞ্চয়ের প্রবণতা কমলে চাহিদার প্রবণতা বাড়ে।
দাম বাড়ার আশঙ্কা বা দাম কমার সম্ভাবনা
ভবিষ্যতে দ্রব্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা থাকলে বর্তমানে দ্রব্যের চাহিদা বাড়ে। আবার ভবিষ্যতে দাম কমার সম্ভাবনা থাকলে বর্তমানে চাহিদা কমে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
অবাধ বাণিজ্য থাকলে দেশের নতুন শিল্প কারখানার যে দ্রব্য সামগ্রী উদ্ভাবন, আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন, সরকারের রাজস্ব নীতি বিশেষ ভাবে চাহিদাকে প্রভাবিত করে।
এছাড়াও আরো অনেক বিষয় রয়েছে যা চাহিদাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে থাকে।