ই-কমার্স ও ই-বিজনেস বর্তমান সময়ে খুব আলোচিত দুটি শব্দ। দুটোই তথ্য প্রযুক্তির আশীর্বাদের ফল। আজকের আর্টিকেলে ই-কমার্স কি বা ই-কমার্স কাকে বলে, ই-বিজনেস কি এবং ই-কমার্স ও ই-বিজনেস এর মধ্যে পার্থক্য কি কি সেসব বিষয় আলোচনা করবো।
প্রথমে জেনে নিই ই-কমার্স কি বা ই-কমার্স কাকে বলে।
ই-কমার্স কি ?
আমরা জানি, ব্যবসায়ের প্রধান দু’টি অঙ্গ। এর একটি হলো শিল্প এবং অপরটি বাণিজ্য। শিল্প মূলত উৎপাদন করে আর বাণিজ্য তা বণ্টন করে। আর ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পণ্য, সেবা ও তথ্য পরিবেশন তথা ক্রয়-বিক্রয়, হস্তান্তর বা বিনিময় কার্যকেই ই-কমার্স বলা হয়ে থাকে।
ই-কমার্স মূলত বিক্রয়ের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের বাইরের বিভিন্ন পক্ষ; যেমন- ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সহযোগী অংশীদার ইত্যাদির সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) ব্যবহারের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন ও সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে এবং পণ্য ও সেবা বিক্রয় ও সরবরাহের ব্যবস্থা করে। মূলত ই-বিজনেস এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গই হলো ই-কমার্স।
আরও পড়ুন: ব্যবসায় উদ্যোগ কি? ব্যবসায় উদ্যোগের কার্যাবলী আলোচনা কর
ই-কমার্স এর পূর্ণরূপ কি ?
ই-কমার্স (E-commerce) এর পূর্ণরূপ হলো ইলেক্ট্রনিক কমার্স (Electronic Commerce)।
ই-কমার্স এর প্রতিষ্ঠাতা কে ?
১৯৭৯ সালে মাইকেল অ্যালড্রিচ সর্বপ্রথম ইলেক্ট্রনিক শপিং আবিষ্কার করেন। এজন্য তাকে ই-কমার্স এর প্রতিষ্ঠাতা বা উদ্ভাবক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এবার আসি ই-বিজনেস কি তা জেনে নিই।
ই-বিজনেস কি ?
উৎপাদন ও বণ্টন সংক্রান্ত ব্যবসায়িক সকল কার্যক্রমের সহায়তায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগকেই ই-বিজনেস বলে। ই-কমার্স, ই-মার্কেটিংসহ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রমই এর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ সকল ধরনের অনলাইন ব্যবসায় ই-বিজনেসের অন্তর্ভুক্ত বিষয়।
ই-বিজনেসের বিভিন্ন ধরন রয়েছে। যেমন- ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় (B2B), ব্যবসায় থেকে ভোক্তা (B2C), ব্যবসায় থেকে সরকার (B2G), ভোক্তা থেকে ব্যবসায় (C2B), ভোক্তা থেকে ভোক্তা (C2C), সরকার থেকে সরকার (G2G) ইত্যাদি।
ই-কমার্স ও ই-বিজনেস এর মধ্যে পার্থক্য
পার্থক্যের বিষয় | ই-বিজনেস | ই-কমার্স |
১. আওতা | ই-বিজনেসের আওতা অনেক বিস্তৃত। ই-কমার্স, ই-মার্কেটিং, ই-রিটেইলিং সহ সবই এর অন্তর্ভুক্ত। | ই-কমার্স ই-বিজনেসের অধীন। ই-রিটেইলিং ও ই-মার্কেটিং ই-কমার্সকে তার পণ্য বণ্টন প্রক্রিয়ায় সহযোগী হিসেবে কাজ করে। |
২. কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি | অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠা ও লেনদেনের বিস্তৃত কর্মকাণ্ড এর অধীন। | পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ও এর প্রয়োজনে প্রচার, বিজ্ঞাপন, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, মজুদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার এর কর্মকাণ্ডের মধ্যে পড়ে। |
৩. প্রযুক্তির ব্যবহার | এক্ষেত্রে বিভিন্নমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যেয়ে অনেক বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার হয়। | শুধুমাত্র ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত বিষয়াদি এর অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তুলনামূলকভাবে কম প্রযুুক্তর ব্যবহার হয়ে থাকে। |
৪. সম্পর্কিত পদ্ধতি | B2B, B2C, E2B, P2P ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয় সংশ্লিষ্ট পদ্ধতি ছাড়াও B2E, E2B সহ অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগ ও তথ্য ব্যবস্থাদি এরুপ পদ্ধতির সাথে সম্পর্কযুক্ত। | ক্রয়-বিক্রয় সংশ্লিষ্ট B2B, B2C, E2B, P2P সহ সরবরাহ ব্যবস্থা ও মূল্য পরিশোধ পদ্ধতি এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। |