Home » রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় কী? রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় কী? রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

by TRI

রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়

রাষ্ট্র কর্তৃক গঠিত বা পরবর্তীতে জাতীয়করণকৃত কোনো ব্যবসায়ের মালিকানা, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের অধীনে থাকল তাকে রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় বলে। এরূপ ব্যবসায়ের মূল উদ্দেশ্য হলো জনকল্যাণ বা রাষ্ট্রীয় কল্যাণ সাধন করা।

বেসরকারি বা ব্যক্তি পর্যায়ে যে সকল ব্যবসায় গড়ে ওঠে তার মূল উদ্দেশ্য থাকে মুনাফা অর্জন। এরূপ মুনাফা অর্জনচিন্তা অতিমাত্রায় ক্রিয়াশীল হলে সেক্ষেত্রে ক্রেতাসাধারণ বা জনগণের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়। এছাড়া এমন অনেক ক্ষেত্র থাকে যেখানে সরকারি নিয়ন্ত্রণ না থাকলে রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন- ঢাকা শহরে ওয়াসা পানি এবং তিতাস গ্যাস কোম্পানি জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এতে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক।

আরও পড়ুন:   সমবায় সমিতির নীতিমালা বা আদর্শসমূহ সম্পর্কে আলোচনা কর।

রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য

বর্তমানকালে কম-বেশি সকল দেশেই রাষ্ট্রীয় মালিকানায় বেশ কিছু ব্যবসায় পরিচালিত হতে দেখা যায়। এ ধরনের ব্যবসায়ের যে সকল স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো-

১. স্বতন্ত্র গঠন প্রণালী

রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় মূলত সরকারি নিয়ম-কানুন পালন করে সরকারি উদ্যেগে গঠিত হয়। রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশে বা দেশের আইনসভার বিশেষ আইনবলে অথবা বেসরকারি ব্যবসায় জাতীয়করণ করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় সংগঠিত হতে পারে।

২. রাষ্ট্রীয় মালিকানা

রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়ের মালিক হলো সরকার বা জনগণ। এর সকল সম্পদ রাষ্ট্রের এবং এর কর্মচারীরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রের কর্মচারী হিসেবে গণ্য হয়। অবশ্য এরূপ ব্যবসায় সরকারি ও বেসরকারি যৌথ মালিখানায়ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

৩. স্বাধীন আইনগত মর্যাদা

এরূপ ব্যবসায় বিশেষ আইনবলে গঠিত হয় বিধায় এটি পৃথক আইনগত সত্তা বা মর্যাদার অধিকারী। এ ব্যবসায় নিজ নামে পরিচিত হতে ও নিজস্ব সিলমোহর ব্যবহার করে পরিচালিত হতে পারে।

৪. জনকল্যাণের উদ্দেশ্য

এরূপ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জনকল্যাণ সাধনই মূল লক্ষ্য হিসেবে গণ্য। দেশের অর্থনীতির উপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ, সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ন্যায্যমূল্যে উন্নতমানের পণ্য ও সেবা সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই মূলত এরূপ ব্যবসায় গঠিত হয়।

৫. রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা

রাষ্ট্রীয় ব্যবাসয়ের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা সরকার কর্তৃক নির্বাহ করা হয়। সরকার বিভাগীয় সংগঠন-সরকারি বিভাগ বা মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং বিধিবদ্ধ কর্পোরেশন-সরকার নিযুক্ত নির্বাহী ও পরিচালকমণ্ডলীর অধীনে পরিচালিত হয়। সরকারি কোম্পানিতে সরকার পরিচালক নিয়োগ করে এর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে।

৬. বৃহদায়তন প্রকৃতি

এ ধরনের ব্যবসায় সাধারণত বৃহদায়তন প্রকৃতিতে গড়ে উঠে। উন্নয়নশীল দেশসমূহে যে সকল খাতে প্রচুর মূলধন বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে অথচ বেসরকারি উদ্যোক্তারা বিনেয়াগে উৎসাহিত হয় না সেক্ষেত্রেই এরূপ ব্যবসায় গঠিত ও পরিচালিত হতে দেখা যায়।

৭. চিরন্তন স্থায়িত্ব

এরূপ ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব অনেকটা চিরন্তন প্রকৃতির। জনগণের কাছে জবাবদিহিতার ভয়ে ও অন্যবিধ কারণে সরকার ইচ্ছে করলেও বৃহদায়তন এ ব্যবসায় সহজে গুটাতে পারে না।

Related Posts