Home » অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র কি? এ চুক্তিপত্রে কি কি বিষয় থাকা উচিত?
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র

অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র কি? এ চুক্তিপত্রে কি কি বিষয় থাকা উচিত?

by TRI

অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র

আইনের দ্বারা বলবৎযোগ্য সম্মতিকে চুক্তি বলে। অন্যদিকে অংশীদারদের মধ্যকার চুক্তির বিষয়বস্তু যে দলিলে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র বা অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।

চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি । এরূপ চুক্তি মৌখিক, লিখিত এবং নিবন্ধিত যে কোনো ধরনের হতে পারে। কিন্তু তা লিখিত হওয়ায় উত্তম। কারণ লিখিত চুক্তি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়। ফলে ভুল বুঝাবুঝির কোনো অবকাশ এক্ষেত্রে থাকে না। আদালতেও এরূপ দলিল প্রমাণ্য দলিলে মর্যাদা পায়। এরূপ চুক্তিপত্র বিশদ বর্ণিত হয় এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকালে উদ্ভূত হতে পারে এমন সকল সমস্যার প্রয়োজনীয় সমাধানের বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত থাকে।

অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র এরূপ ব্যবসায় পরিচালনায় যেহেতু মুখ্য ভূমিকা পালন করে তাই অংশীদারদের মধ্যকার ভবিষ্যৎ যে কোনো ভুল বুঝাবুঝিতে এরূপ দলিল যেন মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে সেভাবেই তা প্রণয়ন করা আবশ্যক। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সকল অংশীদারের অধিকার, কর্তব্য ও দায়-দায়িত্ব নিরূপিত হয়।

আরও পড়ুন

অংশীদারি ব্যবসায় কি? অংশীদারের প্রকারভেদ আলোচনা কর।

অংশীদারি চুক্তিপত্রে যেসব বিষয় থাকা উচিত

অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র ব্যবসায় পরিচালনার ভবিষ্যৎ দিক-দর্শন হিসেবে কাজ করে। তাই এর বিষয়বস্তু এমনভাবে নির্ধারণ করা উচিত যাতে ভবিষ্যতে সৃষ্ট হতে পারে এমন সকল সমস্যার সহজ সমাধান এতে পাওয়া সম্ভব হয়। এ লক্ষ্যে চুক্তিপত্রে সাধারণত নিম্নোক্ত বিষয়সমূহের উল্লেখ থাকা উচিত-

১. অংশীদারি ব্যবসায়ের নাম ও ঠিকানা;

২. ব্যবসায়ের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য ও আওতা;

৩. ব্যবসায়ের কার্যক্রম বিস্তৃতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য এলাকা;

৪. অংশীদারদের নাম, ঠিকানা ও পেশা;

৫. ব্যবসায়ের মোট মূলধনের পরিমাণ;

৬. অংশীদারদের প্রত্যেকের প্রদত্ত পুঁজির পরিমাণ ও তা পরিশোধ পদ্ধতি;

৭. অংশীদারগণ ব্যবসায় হতে কোনো অর্থ উত্তোলন করতে পারবে কি না, পারলে কে কত বা কী হারে;

৮. মূলধন ও উত্তোলিত অর্থের ওপর সুদ ধরা হবে কি না, হলে কী হারে;

৯. ব্যবসায়ের লাভ-লোকসান বণ্টন পদ্ধতি ও হার;

১০. ব্যবসায়ের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি;

১১. যে ব্যাংকে হিসাব খোলা হবে তার নাম, ঠিকানা ও হিসাবের ধরন;

১২. ব্যাংকের হিসাব পরিচালনাকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নাম ও পদবি;

১৩. ব্যবসায়ের দলিলপত্র দস্তখত প্রদানকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নাম ও পদবি;

১৪. অংশীদারগণের অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা;

১৫. কোনো অংশীদারকে কোনো বেতন বা পারিতোষিক দেয়া হবে কি না, হলে কী হারে;

১৬. ব্যবসায়ের সুনাম মূল্যায়ন সম্পর্কিত বিধি-বিধান;

১৭. নতুন অংশীদার গ্রহণ ও প্রয়োজনে বিদ্যমান কোনো অংশীদারকে বহিষ্কারের নিয়ম;

১৮. কোনো অংশীদারের মৃত্যুতে বা অবসর গ্রহণকালে ব্যবসায়ের দায়-সম্পত্তি নিরূপণ ও পাওনা পরিশোধ পদ্ধতি;

১৯. ব্যবসায়ের আর্থিক বছরের শুরু ও শেষ সময়;

২০. ব্যবসায়ের বিলোপসাধন পদ্ধতি;

২১. ব্যবসায়ের বিলোপকালে ব্যবসায়ের দায়-সম্পত্তি মূল্যায়ন ও তা বণ্টন প্রণালী;

২২. চুক্তিপত্রের কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজনে তার নিয়ম পদ্ধতি;

২৩. চুক্তিপত্রের বাইরে অংশীদারদের মধ্যে কোনো বিবাদ দেখা দিলে তা মীমাংসার উপায় ইত্যাদি।

Related Posts