১৮৫৭ সালের সিপাহি বিপ্লব তথা ভারতীয়দের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম ব্যর্থ হয়। এ সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে ব্রিটিশ সরকারের শাসননীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্ষমতা লোপ পায় এবং ভারতবর্ষে সরাসরি ব্রিটিশ শাসনের সূচনা হয়। ভারতীয়দের শাসনকার্যে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয় যা ‘ভারতীয় কাউন্সিল আইন-১৮৬১’ নামে পরিচিত। এ আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ-
১. গভর্নর জেনারেলের শাসন পরিষদ পাঁচ জন সাধারণ সদস্য নিয়ে গঠিত হয়।
২. আইনসভার সদস্যসংখ্যা অনধিক ১২ জন করা হয়।
৩. এ আইন দ্বারা সর্বপ্রথম কয়েকজন ভারতীয়কে আইনসভায় ২ বছরের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন সংক্ষেপে আলোচনা কর |
৪. আইনসভা কর্তৃক পাসকৃত যেকোনো বিলে সম্মতি প্রদান, ভেটো প্রদান কিংবা উক্ত বিল ব্রিটিশ রানীর জন্য সংরক্ষিত রাখার অধিকার গভর্নর জেনারেলকে প্রদান করা হয়।
৫. গভর্নর জেনারেলের পূর্ব অনুমতি ব্যতীত সরকারি ঋণ, বৈদেশিক সম্পর্ক, সেনাবাহিনী ইত্যাদি বিষয়ে কোনো বিল আইনসভায় উত্থাপন করা যাবে না।
৬. ১৮৬১ সালের ভারতীয় কাউন্সিল আইন দ্বারা বোম্বাই ও মাদ্রাজের প্রাদেশিক সরকার আইন প্রণয়নের ক্ষমতা লাভ করে। একইসাথে বোম্বে, মাদ্রাজ, পাঞ্জাব ও বাংলা প্রদেশে আইনসভা গঠনের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
৭. স্থানীয় পর্যায়ে যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য স্থানীয় সংস্থা গঠন করা হয়। এসব সংস্থার ওপর ব্রিটিশ সরকারের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে।
ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা কর |
১৮৬১ সালের ভারতীয় কাউন্সিল আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ উপনিবেশিক প্রশাসন ব্যবস্থায় নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ভারতীয়দের অংশগ্রহণ শুরু হয়। তবে এ আইন ভারতে ব্রিটিশ সরকারের স্বার্থরক্ষার জন্যই প্রণীত হয়েছিল।