সুশাসনের বৈশিষ্ট্য
সুশাসন নাগরিকের মানবিক অধিকার নিশ্চিত করে। সচেতন নাগরিকগোষ্ঠী ও সুশীল সমাজ সুশাসনের জন্য বিভিন্ন মতামত দিয়ে থাকেন। জনগণের সন্তুষ্টিই সুশাসনের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত। বিশ্বায়নের সুফল পেতে এবং উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে সুশাসনের বিকল্প নেই। এ দৃষ্টিকোণ থেকে সুশাসন প্রত্যয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে সুশাসনের ধারণার আলোকে সুশাসনের বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা করা হলো-
১. অংশগ্রহণ
কোনো রাষ্ট্রে সুশাসনের ভিত্তি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অংশগ্রহণের সুযোগ। UNDP (United Nations Development Programme) এর মতে, অংশগ্রহণ হচ্ছে মানবাধিকার। রাষ্ট্রীয় কাজে নাগরিকের অংশগ্রহণ সরাসরি অথবা মধ্যবর্তী কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হতে পারে। অর্থাৎ অংশগ্রহণ হতে পারে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নে নাগরিক ও তাদের সংগঠনগুলোর কার্যক্রমকে গতিশীল করা। আবার রাষ্ট্রের যেকোনো প্রতিনিধি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণ সুশাসনের উপস্থিতিকে নির্দেশ করে। এ অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হলে তা সুশাসনের অন্তরায় বলে গণ্য হবে। আবার অংশগ্রহণ হতে পারে সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে, দেশের সংকটকালে গণভোটের ক্ষেত্রে, নীতি প্রণয়ন বা নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে এবং দুর্নীতি হ্রাস করার ক্ষেত্রে। অংশগ্রহণের আরেকটি বড় উপাদান হচ্ছে নাগরিকের ক্ষমতায়ন। যখন একজন নাগরিক উপলব্ধি করে যে, সে চাইলে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, তাহলে বোঝা যাবে যে নাগরিকের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়েছে। চারটি বিষয় কার্যকর হলে নাগরিকের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়। এগুলো হলো- মতামত প্রদানের ক্ষমতা, দক্ষতা, সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও বিচারক্ষমতা।
আরও পড়ুন: পৌরনীতি কি | পৌরনীতি কাকে বলে | পৌরনীতির সংজ্ঞা দাও
২. আইনের শাসন
সুশাসনের অন্যতম দাবি হলো ব্রাষ্ট্রে একটি স্বচ্ছ আইনি কাঠামো থাকবে এবং এটি প্রত্যেকের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য হবে। এক কথায় একেই আইনের শাসন বলে। আইনের শাসন ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় না। আইনের শাসনের অর্থ আইনের প্রাধান্য স্বীকার করা এরং আইনানুযায়ী শাসন পরিচালনা করা। অধ্যাপক এ. ভি. ডাইসি (Prof. A. V. Dicey)’ আইনের শাসনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, আইনের শাসনের অর্থ হলো (ক) আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান (খা সবার জন্য একই প্রকার আইনের ব্যবস্থা থাকবে (গ) কাউকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার করা যাবে না এবং (ঘ) বিনা বিচারে কাউকে আটক করা যাবে না। তাছাড়া অভিন্ন আদালতের ব্যবস্থাও এর অন্তর্ভুক্ত। আইনের শাসনের জন্য প্রয়োজন সরকারের ন্যায়পরায়ণ আচরণ, রাষ্ট্রের নিপীড়নমুক্ত স্বাধীন পরিবেশ এবং নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বিচার বিভাগ। আইনের শাসন যেখানে বিদ্যমান সেখানে নাগরিকদের স্বাধীনতা বহাল থাকে। এর দ্বারা সাম্য, স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, শাসক ও শাসিতের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এসব কারণে আইনের শাসনকে সুশাসনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৩. স্বচ্ছতা
স্বচ্ছতা অর্থ পরিষ্কার, স্পষ্ট ও নির্ভুল হওয়া। যে কোনো ধরনের গোপনীয়তা পরিহার করে নিয়মনীতি মেনে কোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করাকে স্বচ্ছতা’ বলে। স্বচ্ছতা বলতে তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং তথ্য প্রাপ্তির সহজলভ্যতাকেও বোঝায়। স্বচ্ছতা বজায় থাকলে দুর্নীতির আশঙ্কা থাকে না এবং নাগরিকদের কোনো প্রকার হয়রানির শিকার হতে হয় না। সুশাসনে স্বচ্ছতা বলতে সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের পাশাপাশি সব আধাসরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা এবং সংগঠনের স্বচ্ছতাকেও বোঝায়। এর ফলে শাসক-শাসিত, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ও তা পালনকারীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ থাকে না। এতে সুশাসনের পথ সুগম হয়।
৪. সংবেদনশীলতা
ইংরেজি Responsiveness শব্দটি বাংলায় ‘সংবেদনশীলতা’ অথবা ‘সাড়া’ প্রতিশব্দ দিয়ে প্রকাশ করা হয়। সাধারণত কম্পিউটার সায়েন্সের একটি প্রত্যয় হিসেবে Responsiveness শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এ প্রত্যয়টি দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর প্রয়োগকৃত দায়িত্ব যৌক্তিক সময় কাঠামোর (Reasonable Time Frame) মধ্যে সম্পন্ন করাকে বোঝায়। সরকারের যেকোনো প্রতিষ্ঠান নাগরিকদের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে দ্রুত সাড়া প্রদান করবে এবং সময়সীমা সম্পর্কে সচেতন থাকবে। নাগরিকদের বিভিন্ন প্রয়োজন ও চাহিদা সম্পর্কে সম্যকভাবে অবগত থাকলে এবং সেবা প্রার্থীদের সময়ের মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে এটা নিশ্চিত করা যায়। নাগরিক সনদ (Citizen Charter)-এ বর্ণিত সময়সীমা যেখানে বর্ণিত নেই সেখানে স্বল্পতম সময়ে সেবা প্রদানের মাধ্যমে একটি সাড়াপ্রবণ বা সংবেদনশীল প্রশাসন গড়ে তোলা যায়।
৫. ঐকমত্যে পৌছানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা
একটি সমাজে বা রাষ্ট্রে বহু গোষ্ঠী, দল ও মত ক্রিয়াশীল থাকে। এক্ষেত্রে সুশাসনের দাবি হলো, এ ভিন্ন ভিন্ন মত ও স্বার্থের মধ্যেও একটি বৃহৎ ঐকমত্য তৈরি করা যেখানে পুরো সমাজের প্রধান প্রধান দাবি ও স্বার্থের সমন্বয় ঘটবে। পাশাপাশি ঐকমত্যের বিষয়গুলোকে কীভাবে অর্জন করা যায় তার কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। যে সমাজ ও রাষ্ট্রে যত বেশি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে সেখানে সুশাসন তত বেশি নিশ্চিত হবে। বিশৃঙ্খলা দূর হয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।
৬. সাম্য
সাম্যের সাধারণ অর্থ সমতা, একতা, সাদৃশ্য। তবে পৌরনীতিতে সাম্যের অর্থ হচ্ছে সুযোগ-সুবিধাদির সমতা। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি সদস্য যখন অনুভব করতে পারে যে, তার অধিকার অন্য কারও চেয়ে কম নয়; সুশাসনের দৃষ্টিকোণ থেকে সে অবস্থাকেই ‘সাম্য’ বলা হয়। উন্নত দেশগুলোয় ‘সমতাভিত্তিক সেবা’র মাধ্যমে এর প্রতিফলন দেখা যায়। সুশাসন সাম্যকে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ব্যক্তিগত, আইনগত অর্থাৎ নাগরিক জীবনের সব ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করে। রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, ন্যায্য মজুরি পাওয়া, সামাজিক নিরাপত্তা লাভ, আইনের সমান সুযোগ পাওয়া ইত্যাদি বিষয় সাম্যের অন্তর্ভুক্ত। সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই সবার সামনে যথাযথ সুযোগ-সুবিধার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য করা যাবে না।
৭. কার্যকারিতা ও দক্ষতা
কার্যকারিতা ও দক্ষতার অর্থ হলো এমন প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং কার্যপ্রক্রিয়া গ্রহণ করা যা রাষ্ট্রীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে নাগরিকদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করবে। সুশাসনে দক্ষতা প্রত্যয়টির সাথে প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার এবং পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কার্যকারিতা এবং দক্ষতার সাথে পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের বিষয়টিও যুক্ত।
৮. লিঙ্গ বৈষম্যের অবসান
লিঙ্গ বৈষম্য বলতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্যকে বোঝানো হয়। নারীদের প্রতি অবহেলা, তাদের কাজের ন্যায্য মজুরি, মর্যাদা ও স্বীকৃতি না দেওয়া প্রথাগত পুরুষশাসিত সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সুশাসন লিঙ্গ বৈষম্যকে সমর্থন করে না। তাই সুশাসন বিদ্যমান থাকলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যোগ্য ব্যক্তিকে উপযুক্ত পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে সামাজিক উন্নয়ন ও প্রগতি ত্বরান্বিত হয়।
৯. সরকারের বৈধতা
সুশাসনের জন্য সরকারকে অবশ্যই বৈধ হতে হবে। সরকার হতে হবে যথাযথ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত অর্থাৎ জনগণের সমর্থনপুষ্ট। সরকারের কার্যক্রম, নীতি ও সিদ্ধান্ত এবং প্রণীত আইনের প্রতি জনগণের সমর্থন ও স্বীকৃতি থাকা প্রয়োজন। কারণ সরকার বৈধ ও স্থিতিশীল না হলে সুশাসন সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে অবৈধ সরকার স্বেচ্ছাচারী ও দুর্নীতিপরায়ণ হয়। সামরিক বা এ ধরনের কোনো অগণতান্ত্রিক শাসন কখনোই সুশাসন নিশ্চিত করতে পারে না। কেননা সরকারের বৈধতা-অবৈধতার প্রশ্ন সুশাসনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।
১১. সুশীল সমাজ
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সুশীল সমাজের ভূমিকাকে বর্তমানে খুবই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়। সুশীল সমাজ সাধারণত নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেন। নাগরিক সমাজের এই বিশিষ্ট প্রতিনিধিরা সংবাদপত্র, রেডিও, টিভিসহ গণমাধ্যম এবং নানা সামাজিক, আর্থিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে বা মুখপাত্র হিসেবে যেসব বক্তব্য দেন তা সুষ্ঠু জনমত সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১২. বিকেন্দ্রীকরণ
বিকেন্দ্রীকৃত প্রশাসনিক ব্যবস্থাকেও অনেকে সুশাসনের বৈশিষ্ট্য বলে চিহ্নিত করে থাকেন। প্রকৃত বিকেন্দ্রীকরণ বলতে শুধু প্রশাসনের উচ্চ থেকে নিম্নস্তর পর্যন্ত প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রত্যর্পণ নয়, একই সাথে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অর্পণকেও বোঝায়। USAID (The United States Agency for International Development) এর মতে, ‘কার্যকরী বিকেন্দ্রীকরণ স্থানীয় পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং জাতীয় পর্যায়ে সুশাসনের উন্নতিতে সাহায্য করে।’
বিকেন্দ্রীকরণের ফলে সরকারি কর্মকান্ডে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায়। এছাড়া এর মাধ্যমে প্রশাসনের মূল্যবান সময়ের সাশ্রয় করা, স্থানীয় নাগরিক চাহিদা পূরণ বৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
১৩. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকলে জনমত বাধাগ্রস্ত হয়। শক্তিশালী জনমত সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক। বাক স্বাধীনতা ও সুশাসন নিশ্চিত করে গণতন্ত্রকে সফল করতে হলে গণমাধ্যমকে হতে হবে সরকারের হস্তক্ষেপমুক্ত। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান (সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন) এবং ফেসবুক, টুইটারের মতো অনলাইন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয়টি সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
১৪. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সুশাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে সুশাসন ব্যাহত হয়। থমকে যায় সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতি।
১৫. মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ
জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সুশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। মৌলিক অধিকারের বাস্তবায়ন সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
১৬. স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা
স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার উপস্থিতি সুশাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce)” মনে করেন, ‘বিচার বিভাগের দক্ষতাই সরকারের শাসন ক্ষমতার দক্ষতা।’ যে দেশের বিচার বিভাগ যত বেশি দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে দেশে সুশাসনের ভিত তত বেশি মজবুত হয়। বিচার বিভাগ শাসন বিভাগকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে এবং নাগরিকের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করে ও আইনের শাসন অক্ষুন্ন রেখে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সজীব রাখে। তাই সুশাসন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে বিবেচিত।
১৭. কৌশলগত লক্ষ্য
সুশাসনের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হলো রাষ্ট্র এবং নাগরিকের উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি কৌশলগত লক্ষ্য স্থির করা। এ লক্ষ্য স্থির করার ক্ষেত্রে ঐ রাষ্ট্র এবং সমাজের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং নৃতাত্ত্বিক পটভূমিকে বিবেচনায় রাখতে হবে।
সুশাসনের এ বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে এটি সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, পুরোমাত্রায় সুশাসন অর্জন করা যেকোনো রাষ্ট্রের জন্যই বেশ কঠিন। তারপরও টেকসই মানব উন্নয়নের জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রেরই উচিত সুশাসন অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। সুশাসনের বৈশিষ্ট্যগুলো অর্জনের মাধ্যমে একটি দেশ কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে।