Home » জাতীয় আয় কাকে বলে? বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের বিভিন্ন খাত বা উৎস
জাতীয় আয় কাকে বলে

জাতীয় আয় কাকে বলে? বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের বিভিন্ন খাত বা উৎস

by TRI

জাতীয় আয়

জাতীয় আয় হলো একটি দেশের সমগ্র মানুষের আয়ের সমষ্টি। কোন দেশের জনগণের বিভিন্ন প্রকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন : কৃষি ও শিল্পজাত দ্রব্য উৎপাদন, জলজ ও খনিজ আহরণ, শিক্ষকের শিক্ষা দান, ডাক্তারের সেবা, নার্সের সেবা এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজের ফলে প্রতি বছর যে পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রী ও সেবা কার্যের প্রবাহ সৃষ্টি হয় তাদের আর্থিক মূল্যের সমষ্টিকে জাতীয় আয় বলে। জাতীয় আয়ের মধ্যে বস্তুগত ও অবস্তুগত দ্রব্যসামগ্রী অন্তর্ভুক্ত থাকে। বস্তুগত দ্রব্যসামগ্রী হলো যা দেখা যাবে, ধরা যাবে এবং ছোঁয়া যাবে তাই। আবার অবস্তুগত দ্রব্যসামগ্রী হলো যা ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না ইত্যাদি। যেমন: ডাক্তার, শিক্ষক ও নার্সের সেবা।

আরও পড়ুন:   জাতীয় আয় পরিমাপের পদ্ধতি সমূহ কি কি?

বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ জাতীয় আয়কে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন যা নিম্নরূপ :

  • অধ্যাপক মার্শাল-এর মতে, “কোন দেশের শ্রম ও মূলধন তার প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে ব্যবহার করে প্রতিবছর মোট যে পরিমাণ বস্তুগত ও অবস্থগত দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকর্ম উৎপাদন করে তাকে জাতীয় আয় বলে।”
  •  অধ্যাপক পিগুর মতে, “জাতীয় আয় হলো বিদেশ হতে প্রাপ্ত আয়সহ সমাজের বাস্তব আয়ের সে অংশ যা অর্থের মাধ্যমে পরিমাপ করা যায়।”
  • অধ্যাপক স্যামুয়েলসনের মতে, “একটি দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকার্যের বার্ষিক প্রবাহের সর্বমোট আর্থিক মূল্যই হলো জাতীয় আয়।”
  • অধ্যাপক ফিশারের মতে, “জাতীয় আয় হলো কোন নির্দিষ্ট সময়ে কোন সমাজের মোট ভোগ ও বিনিয়োগ ব্যয়ের সমষ্টি।”

উল্লিখিত অর্থনীতিবিদদের সংজ্ঞাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কোন নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক বছরে উৎপাদনের উপাদানগুলো উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয়ে যে পরিমাণ বস্তুগত ও অবস্তুগত দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকর্ম উৎপাদিত হয় তার আর্থিক মূল্যই হলো জাতীয় আয়।

জাতীয় আয়ের বিভিন্ন খাত বা উৎস

বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের উৎসসমূহ দেখানোর উদ্দেশ্যে উৎপাদনের ক্ষেত্রগুলোকে মোট ১৫টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে। এদের এক একটি শ্রেণিকে এক একটি খাত বলা হয়। আবার কোনো কোনো খাতের উপ-খাতও রয়েছে। নিচে এগুলোর তালিকা দেয়া হলো-

জাতীয়আয় পরিমাপের বিভিন্ন খাত ও উপখাত/উৎসসমূহ

ক্রমিক নং খাত উপখাত
১। কৃষি সম্পদ ক) শস্য ও শাক-সবজি

খ) প্রাণিসম্পদ

গ) বনজসম্পদ

২। মৎস্য সম্পদ
৩। খনিজ ও খনন ক) প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল

খ) অন্যান্য খনিজ সম্পদ ও খনন

৪।  শিল্প (ম্যানুঃ) ক) বৃহৎ ও মাঝারি শিল্প

খ) ক্ষুদ্রায়তন শিল্প

৫। বিদ্যুৎ গ্যাস ও পানিসম্পদ ক) বিদ্যুৎ

খ) গ্যাস

গ) পানি

৬। নির্মাণ
৭। পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য
৮।  হোটেল ও রেস্তোরাঁ
৯। পরিবহণ, সংরক্ষণ ও যোগাযোগ ক) স্থলপথ পরিবহন

খ) জলপথ পরিবহন

গ) আকাশপথ পরিবহন

ঘ) সহযোগী সেবা ও সংরক্ষণ

ঙ) ডাক ও তার যোগাযোগ

১০। আর্থিক প্রাতিষ্ঠানিক সেবা ক) ব্যাংক

খ) বিমা

গ) অন্যান্য

১১। গৃহায়ন (রিয়েল এস্টেট) ভাড়া ও অন্যান্য ব্যবস্থা
১২।  লোকপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা
১৩। শিক্ষা
১৪। স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা
১৫। কমিউনিটি, সামাজিক ও ব্যক্তিগত সেবা

সম্পর্কিত আর্টিকেল

জাতীয় আয় পরিমাপের গুরুত্ব আলোচনা কর

জাতীয় আয়ের চক্রাকার প্রবাহ কি?

জাতীয় আয় পরিমাপে সমস্যাগুলো কি কি?

 

Related Posts