Home » বাণিজ্য কি? বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

বাণিজ্য কি? বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

by TRI

বাণিজ্য

শিল্পে উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোগকারী বা ব্যবহারকারীদের নিকট প্রেরণের ক্ষেত্রে সম্পাদিত কার্য সমষ্টিকেই বাণিজ্য বলে। বাণিজ্য হলো ব্যবসায়ের বণ্টনকারী শাখা। অর্থাৎ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে শিল্পে উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোক্তা বা ব্যবহারকারীদের নিকট বণ্টন করাই বাণিজ্যের কাজ।

বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য

শিল্পে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী পরবর্তী শিল্পে বা প্রকৃত ভোগকারীর নিকট পৌঁছানোর ক্ষেত্রে যে সকল কাজ সম্পাদিত হয় তার সমষ্টিকে বাণিজ্য বলে। নিম্নে এর বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচিত হলো-

১. বণ্টনকারী শাখা

বাণিজ্য ব্যবসায়ের বণ্টনকারী শাখা হিসেবে বিবেচিত। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে শিল্প পণ্য উৎপাদন করে ভোগকারী বা ব্যবহারকারীদের জন্য। শিল্প এ কাজে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বা ক্রয়-বিক্রয় ও এর সহায়ক কার্যাবলির ওপর নির্ভর করে। যেমন- ইউনিলিভার তাদের কারখানার প্রসাধনী সামগ্রী উৎপাদন করে। দেশেল সকল অঞ্চলের গ্রাহকদের নিকট এ সকল পণ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাণিজ্যই তাদের মুখ্য অবলম্বন। আবার প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও উপকরণ সংগ্রহেও তারা বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল।

আরও পড়ুন:   ব্যবসায়ের আওতা ও পরিধি আলোচনা কর।

২. বিকেন্দ্রীভূত কাজ

শিল্প থেকে পরবর্তী ব্যবহারকারী বা ভোগকারীদের নিকট পণ্য পৌঁছাতে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড শহরের কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। শিল্পের কাজ যেভাবে শিল্পকেন্দ্রে কেন্দ্রীভূত থাকে এক্ষেত্রে তার সুযোগ নেই। যেমন- বি.আর.বি তাদের কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠিত শিল্পে বিভিন্ন কেবল উৎপাদন করছে। কিন্তু তা বিক্রয় হচ্ছে দেশের সর্বত্র। এর সাথে বিভিন্ন বড়-ছোট নানান ব্যবসায়ী, ডিলার, প্রতিনিধি ইত্যাদি যুক্ত। নানান সহায়ক কর্মকাণ্ডও এর সাথে সম্পৃক্ত।

৩. ব্যক্তিগত ও সহায়ক উপযোগ সৃষ্টি

বাণিজ্য মূলত ব্যক্তিগত ও স্বত্বগত উপযোগ সৃষ্টি করে। অর্থাৎ উৎপাদনকারী ও ভোগকারী ভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় উৎপাদনকারী থেকে তা ভোগকারীর মালিকানায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এ জন্য প্রয়োজনে একাধিকবার ক্রয়-বিক্রয়ের প্রয়োজন দেখা দেয়। এর সাথে বিভিন্ন সহায়ক; যেমন- অর্থগত, ঝুঁকিগত, স্থানগত, কালগত, জ্ঞানগত উপযোগ সৃষ্টি আবশ্যক হয়। যা সৃষ্টি বা যোগাড় করে বাণিজ্য পণ্য বণ্টনকে সহজতর করে।

৪. চলতি মূলধনের আধিক্য

বাণিজ্যের প্রধান অঙ্গ হলে ক্রয়-বিক্রয়। আর এ কাজে চলতি মূলধনের বেশি প্রয়োজন পড়ে। শিল্প মালিককে যেভাবে ভূমি, দালান-কোঠা, যন্ত্রপাতি ইত্যাদির পিছনে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হয় একজন ট্রেডারসকে তা করতে হয় না। দোকান বা শোরুম জোগাড় ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে গুদামের ব্যবস্থা এক্ষেত্রে মূলত স্থায়ী খরচ। সে যে মাল ক্রয় করে সময়ের ব্যবধানে তা বিক্রয় হয়ে আবার নগদ অর্থে ফিরে আসে। সে যতই ক্রয় বিক্রয় করতে পারে ততই তার লাভ। তাই এক্ষেত্রে তার বিনিয়োগে চলতি মূলধনই মুখ্য।

৫. সহজে বিনিয়োগ স্থানান্তরের সুযোগ

বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে দ্রুত বিনিয়োগ স্থানান্তরের সুযোগ এর একটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। ‘দোকান বিক্রয় হবে’, ‘ব্যবসায় পরিবর্তন হেতু মূল্য হ্রাস’ ইত্যাদি ঘোষণা এর উদাহরণ। শিল্পে খারাপ করলে বিনিয়োগকারীর সেখান থেকে যথেষ্ট মূলধন নিয়ে ফিরে আসার সুযোগ কম থাকে। কিন্তু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেকাংশেই সেই বিনিয়োগ নিয়ে ফিরে আসা সম্ভব। এজন্যই অনেকে শিল্প বিনিয়োগে নিরূৎসাহিত হয়।

Related Posts