Home » মূলধন কাকে বলে? মূলধনের প্রকারভেদ আলোচনা কর

মূলধন কাকে বলে? মূলধনের প্রকারভেদ আলোচনা কর

by TRI

মূলধন

সাধারণ অর্থে মূলধন বলতে টাকা-পয়সা বা ব্যবসায়ে নিয়োজিত অর্থকে বোঝানো হয়। অর্থনীতিতে মূলধন হচ্ছে সেই জিনিসটি, যা মানুষের শ্রম দ্বারা উৎপাদিত হয়েছিল এবং পুনরায় অধিকতর উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে যন্ত্রপাতি, দালানকোঠা, কাঁচামাল, শস্যের বীজ ইত্যাদিকে মূলধন হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। মানুষের তৈরি এসব দ্রব্য পুনরায় উৎপাদনকাজে ব্যবহৃত হয়ে অতিরিক্ত আয় অর্জনে সহায়তা করে বলে এগুলোকে মূলধন বলে।

অর্থনীতিবিদ চ্যাপম্যান বলেন, “যে সম্পদ কোনো আয় সৃষ্টি করে অথবা উপার্জনে সহায়তা করে তা-ই মূলধন।”

বম বাওয়ার্ক (Bohm Bawerk) এর মতে, “মূলধন হল উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান।” (Capital is the Produced means of Production.)

মূলধনের প্রকারভেদ

মূলধন বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। নিচে বিভিন্ন প্রকারভেদের বিবরণ দেওয়া হলো-

ক) মালিকানার ভিত্তিতে মূলধন তিন প্রকার। যথা-

১. ব্যক্তিগত মূলধন

ব্যক্তিবিশেষের হাতে যেসব মূলধনের মালিকানা থাকে তাকে ব্যক্তিগত মূলধন বলে। যেমন- ব্যক্তিগত কারখানা, ঘরবাড়ি, শেয়ার, ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমি, যানবাহন প্রভৃতি ব্যক্তিগত মূলধনের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ব্যক্তি বা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সুনামও ব্যক্তিগত মূলধন হিসেবে স্বীকৃত।

২. সামাজিক মূলধন

সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ অবাধে যে মূলধন ব্যবহার করতে পারে তাকে সামাজিক মূলধন বলে। যেমন- সেতু, সড়ক, পার্ক, হাসপাতাল ইত্যাদি।

৩. জাতীয় মূলধন

যেসব মূলধন রাষ্ট্রের অধীনে থাকে এবং দেশের সকল জনগণের সামগ্রিক বা যৌথ মূলধনের সমষ্টিকে জাতীয় মূলধন বলে। যেমন- রাষ্ট্রীয় মালিকানায় কারখানা, ব্যাংক, রেলওয়ে, পোস্টঅফিস, বিমানবন্দর। এছাড়া দেশপ্রেমও জাতীয় মূলধনের অন্তর্ভুক্ত।

আরও পড়ুন:  আর্থিক মজুরি ও প্রকৃত মজুরির মধ্যে পার্থক্য

খ) ব্যবহারের তারতম্যের ভিত্তিতে মূলধন দুই প্রকার। যথা-

১. নিমজ্জমান মূলধন

নিমজ্জমান মূলধন হলো সেই মূলধন, যা শুধু একটি বিশেষ ধরনের উৎপাদনকাজে ব্যবহার হয় এবং তা অন্য কোনো উৎপাদনকাজে ব্যবহার করা যায় না। যেমন- সেলাই মেশিন, রেলপথ, লৌহ গলানোর চুল্লি, কৃষকের লাঙল ইত্যাদি।

২. ভাসমান মূলধন

একাধিক উৎপাদনকাজে ব্যবহার করা যায় এবং প্রয়োজনবোধে একস্থান থেকে অন্যস্থানে বা এক শিল্প থেকে অন্য শিল্পে স্থানান্তর করা যায়। যেমন- কাঁচামাল, বিদ্যুৎ, কয়লা, যানবাহন ইত্যাদি।

গ) ভোগ বা ব্যবহারের ভিত্তিতে মূলধন দুই প্রকার। যথা-

১. উৎপাদক মূলধন

সরাসরি ভোগের জন্য ব্যয় না হয়ে উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন- কলকারখানা, যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ইত্যাদি।

২. ভোগ্য মূলধন

উৎপাদন চলাকালে উৎপাদনকাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের ভরণপোষণ ও জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহের কাজে ব্যবহৃত হয়। যেমন- শ্রমিকদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি।

ঘ) স্থায়িত্বের ভিত্তিতে মূলধন দুই প্রকার। যথা- ১. স্থায়ী মূলধন ও ২) চলতি মূলধন

Related Posts