Home » ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা কাকে বলে?

ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা কাকে বলে?

by TRI

ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা

ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা পদ্ধতির প্রণেতা প্রখ্যাত সুইডিস অর্থনীতিবিদ গুনার মিরডাল। মিরডাল বিকাশমান দেশের জন্য ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করেন। তিন শ্রেণীর পরিকল্পনা নিয়ে ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা গঠন হতে পারে।

১. প্রথমত: প্রতি বছর তিনটি পরিকল্পনা রচনা করা হবে – আগামী এক বছরের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন।

২. দ্বিতীয়ত: পরবর্তী কয়েক বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহণ – যেমন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে বার্ষিক পরিকল্পনার সমন্বয় সাধন, বিগত বছর বাদ ও অতিরিক্তি একটি বছর গ্রহণ – এই পদ্ধতিতে অগ্রসর হতে হবে।

৩. তৃতীয়ত: একটি ১৫ বা ২০ বছরের দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা গ্রহণ।

ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনার মূল ধারণা হল প্রতি বছরের শেষে মধ্যবর্তীকালীন পরিকল্পনাকে প্রাপ্ত সহায় সম্পদের প্রেক্ষিতে মূল্যায়ন ও পুনঃগঠন করে তাকে অধিকতর বাস্তবমুখী করে তোলা। ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনার মূল ধারণা কারবারী সংস্থা এবং সরকারের বাজেট সংক্রান্ত ধারণা হতে নেয়া হয়েছে।

এরূপ পরিকল্পনা পদ্ধতি প্রথম গ্রহণ করে কোষ্টারিকা ও ফিলিপাইন। বার্মা ও মেক্সিকোতেও এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে তা সফল হয়নি।

আরও পড়ুন:  মুক্ত বাজার অর্থনীতি কি? মুক্ত বাজার অর্থনীতির সুবিধাসমূহ কি কি?

ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা গ্রহণের অর্থ এই নয় যে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাতিল করা হল।  ‍ঘুর্ণায়মান পরিকল্পনা কোন মৌল পরিবর্তন নয় তা শুধু পরিকল্পনার কৌশলগত পরিবর্তন। পরিকল্পনার এই কৌশল গ্রহণ করলে দেশ প্রতি বছর বার্ষিক পরিকল্পনার ফলাফলের ধারণা পাবে। এই পরিকল্পনা পদ্ধতির সুবিধা হল একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কার্যকাল শেষ হওয়ার সঙ্গে অপর একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার রূপরেখা চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। কর্মসূচী পূর্ব থেকে প্রস্তুত থাকায় প্রাথমিক কাজের জন্য সময়ের কোনরূপ অপচয় হবে না এবং অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের মধ্যে সমন্বয় সাধন হবে।

ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনায় তত্ত্বের সঙ্গে বাস্তবের সমন্বয় সাধন করা হয়। দীর্ঘকালীন পূর্বানুমানের ব্যবস্থাও যেমন থাকে সে রূপ দৈনন্দিন সমস্যাও এর অন্তর্গত। ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা পরিকল্পনা কমিশনকে যেমন নুতন কর্তৃত্ব দেয় তেমনি এর উপর নতুন দায়িত্বও অর্পন করে। স্বল্প ও দীর্ঘকালীন নীতি নির্ধারণে এর গুরুত্ব অসীম। এই পরিকল্পনায় সামগ্রিক আয়তনের উপর যতখানি গুরুত্ব দেওয়া হয় ঠিক ততখানি গুরুত্ব দেওয়া হয় খুটিনাটি বিষয়ের উপর।

পরিকল্পনা উদ্দেশ্য সাধনের হাতিয়ার মাত্র। এজন্য দীর্ঘকালীন দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিগত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সজাগ না থাকলে ঘূর্ণায়মান পরিকল্পনা তার সামাজিক ও অর্থনৈতিক তাৎপর্য হারিয়ে কতিপয় পন্ডিতের অর্থহীন প্রকল্পে পর্যবসিত হতে পারে।

Related Posts