Home » শিল্প সম্পর্ক কি? শিল্প সম্পর্কের উদ্দেশ্য আলোচনা কর।

শিল্প সম্পর্ক কি? শিল্প সম্পর্কের উদ্দেশ্য আলোচনা কর।

by TRI

কর্মী বা শিল্প সম্পর্ক

শ্রমিক-শ্রমিক, শ্রমিক-মালিক বা শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনার মধ্যে বিদ্যমান পারস্পরিক সম্পর্ককে কর্মী বা শিল্প সম্পর্ক বলা হয়। কর্মী সম্পর্ককে অনেকে শ্রম-ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক, মানবীয় সম্পর্ক, শ্রম বা শিল্প সম্পর্ক নাভে অভিহিত করেন।

মালিক তথ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পুঁজি বিনিয়োগের মাধ্যমে শ্রমিকদের ব্যবহার করে। অন্যদিকে, শ্রমিক মজুরি তথা অর্থের বিনিময়ে শ্রম দিয়ে থাকে। এভাবে শ্রম-ব্যবস্থাপনার মধ্যে যে সম্পর্ক স্থাপিত হয় তাই হলো শ্রম-ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক। এটিকে শিল্প সম্পর্ক বলে আখ্যায়িত করা হয়।

আবার স্বার্থের দিক থেকে শ্রম ও ব্যবস্থাপনা এ দুটি পক্ষের অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত। শ্রমিকরা মনে করে, তাদের ন্যায়সঙগত দাবি-দাওয়া ব্যবস্থাপনা কর্তৃক ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্যবস্থাপনার ধারণা শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া অসংগতিপূর্ণ। এরূপ ধারণা থেকে পক্ষ দুটির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এমতাবস্থায় উত্তম শিল্প সম্পর্ক বজায় রাখার লক্ষ্যে শ্রমিক সংঘকে আহ্বান করা হয়। কাজেই শিল্প সম্পর্ক বলতে শ্রমিক, ব্যবস্থাপনা ও শ্রমিক সংঘের পারস্পরিক সম্পর্ককে বুঝানো হয়।

নিম্নে শিল্প সম্পর্কের কতিপয় সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলো-

Milkovich ও Boudreau বলেন, “Labour relations is a continuous relationship between a defined group of employees (represented by a union or association) and a employer.” অর্থাৎ, নির্দিষ্ট কর্মী দল (ইউনিয়ন বা সংস্থা দ্বারা প্রতিনিধিত্বকারী) এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে চলমান সম্পর্ককে শ্রম সম্পর্ক বলে।

Prof. R. W. Griffin এর মতে, “Labour relations is the process of dealing with employees when they are represented by a union.” অর্থাৎ, শ্রম সম্পর্ক হচ্ছে কর্মীদের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনার একটি প্রক্রিয়া যেখানে তারা শ্রমিক সংঘের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে।

আরও পড়ুন:  মানসিক চাপ কমানোর উপায় – যেভাবে দূর করবেন মানসিক চাপ

শিল্প সম্পর্কের উদ্দেশ্য

শিল্প সম্পর্কের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ Dale Yoder বলেন, “শিল্প সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার ঐ অংশ যা মানব সম্পদকে নিয়ন্ত্রণ কর এমন একটি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে যা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের নিশ্চয়তা দেয়।” প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-মালিক, শ্রমিক-ব্যবস্থাপনা, শ্রমিক সংঘ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে শিল্প শান্তি বজায় রাখা এবং জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতি সাধন করা শিল্প সম্পর্কের মুখ্য উদ্দেশ্য।

এছাড়াও শিল্প সম্পর্কের মূল উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নরূপ:

১. শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ শিল্পের পরিবেশ সৃষ্টি করা।

২. উন্নত কার্য পরিবেশ সৃষ্টি করে অব্যাহত উৎপাদন বজায় রাখা।

৩. শ্রমিক-মালিক বা ব্যবস্থাপনা ও সরকারের মধ্যে উভয় সম্পর্ক সৃষ্টি ও বজায় রাখা।

৪. শ্রমিক-মালিক বা ব্যবস্থাপনার স্বার্থরক্ষার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমঝোত সৃষ্টি করা।

৫. প্রতিষ্ঠানে শিল্প বিরোধের অবসান করে স্থায়ী শান্তি বজায় রাখা।

৬. শ্রমিকের মনোবল ও কার্য সন্তুষ্টি অর্জন করা।

৭. শিল্পীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা।

৮. উৎপাদন মান ও পরিমাণ বৃদ্ধি করে প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক সংগঠনে রূপান্তর করা।

৯. শ্রমিকের মজুরি ও অন্যান্য সুবিধাদি বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানের উন্নতি সাধন।

১০. প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের সাথে সাথে ব্যক্তিক উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ করা।

১১. অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নতি সাধন ও জাতীয় অগ্রগতিতে অবদান রাখ।

১২. শ্রমিক ওব্যবস্থাপনার মধ্যে উন্নত মনোভাব সৃষ্টি করে শিল্প সংঘাত দূরীকরণে সহায়তা করা।

Related Posts