Home » এরিস্টটলের সরকারের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর

এরিস্টটলের সরকারের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর

by TRI

সরকারের শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে এরিস্টটল

এরিস্টটল প্রায় ১৫৪ টি দেশের শাসনতন্ত্র পর্যবেক্ষণ করার পর সংবিধান বা সরকারের শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি সরকার সম্পর্কে বলেছেন, “Government is everywhere the sovereign in the state and the constitution in fact the government.” 

এরিস্টটলই হচ্ছেন একমাত্র রাজনৈতিক দার্শনিক, যিনি বিজ্ঞানসম্মত সরকারের শ্রেণীবিভিাগের সূত্রপাত করেছেন।

এরিস্টটল দু’টি মূলনীতি অনুসারে সরকারের শ্রেণীবিভাগ করেছেন। একটি সংবিধান বা সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অনুসারে এবং অপরটি শাসকের সংখ্যা অনুসারে। লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যের পার্থক্য অনুসারে সংবিধান দু’প্রকার। যথা- ক. শুদ্ধ ও খ. বিকৃত।

এরিস্টটলের মতে, যে শাসন শুধু শাসকের স্বার্থে পরিচালিত না হয়ে সমাজের সাধারণ স্বার্থে পরিচালিত হয় তা হল শুদ্ধ প্রকৃতির সংবিধান। কিন্তু, যে শাসন সমাজের সাধারণ স্বার্থকে উপেক্ষা করে শুধু শাসকের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয় তা বিকৃত প্রকৃতির সংবিধান। এ উভয় প্রকার সংবিধানে সার্বভৌম ক্ষমতা যাদের হাতে ন্যস্ত, তাদের সংখ্যা অনুযায়ী সংবিধানকে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। যথা-

১. একজনের শাসন,

২. কতিপয়ের শাসন, ও

৩. নাগরিক সাধারণের শাসন।

সম্পর্তি বিষয়সমূহ

 এরিস্টটলের বিপ্লব তত্ত্ব মতে বিপ্লবের কারণ ও প্রতিকারের উপায়

 এরিস্টটল এর দাস প্রথা আলোচনা কর

 এরিস্টটলকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন? রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তাঁর অবদান

মূলত এরিস্টটল সংবিধান বা সরকারের যে শ্রেণীবিভাগ করেছেন তার মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নিম্নলিখিত ছয় প্রকার:

শাসকের সংখ্যা

Number of rulers

সরকারের শুদ্ধরূপ

Normal form

সরকারের বিকৃতরূপ

Prevented form

একজনের শাসন

Rule by one

১. রাজতন্ত্র

Monarchy

৪. স্বৈরতন্ত্র

Tyranny

কয়েকজনের শাসন

Rule by few

২. অভিজাততন্ত্র

Aristocracy

৫. কুলীনতন্ত্র

Oligarchy

নাগরিক সাধারণের শাসন

Rule by many

৩. ন্যায়তন্ত্র

Polity

৬. গণতন্ত্র

Democracy

নিম্নে সংবিধান বা সরকারের শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে এরিস্টটল এর ধারণা আলোচনা করা হলো-

১. একজনের শাসন

এরিস্টটল বলেছেন, একজনের শাসন যদি মহৎ উদ্দেশ্যের দ্বারা চালিত হয় এবং শাসক নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে যদি জনগণের মঙ্গল সাধন করে তখন তাকে রাজতন্ত্র বা Monarchy বলে। কিন্তু, শাসক যদি নিজের স্বার্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে ইচ্ছামতো শাসন করে তাকে স্বৈরতন্ত্র বা Tyranny বলে।

২. কতিপয়ের শাসন

যদি কিছু সংখ্যক লোকের হাতে রাষ্ট্রীয় ভার ন্যস্ত থাকে এবং শাসকগণ জনস্বার্থে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে তখন এ প্রকার শাসনকে অভিজাততন্ত্র বা Aristocracy বলে। অপরদিকে, যদি তারা গোষ্ঠী স্বার্থের দিকে লক্ষ রেখে জনগণের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে তখন তাকে কুলীনতন্ত্র বা Oligarchy বলে।

৩. নাগরিক সাধারণের শাসন

যে শাসনব্যবস্থা বহুজনের হাতে বা নাগরিক সাধারণের হাতে ন্যস্ত থাকে এবং এ প্রকার শাসন দ্বারা জনগণের সার্বিক কল্যাণ সাধিত হয়, তাকে বিধানতন্ত্র বা ন্যায়তন্ত্র (Polity) বলে। কিন্তু এ শাসন যদি শ্রেণী স্বার্থরক্ষার জন্য পরিচালিত হয় তবে তখন তাকে গণতন্ত্র বা Democracy বলে।

Related Posts