নমুনা বিচ্যুতি
নমুনা বিচ্যুতি হল নমুনা উদ্ভূত ফল এবং শুমারি উদ্ভূত ফলের মধ্যে পার্থক্য।
কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হলে নমুনা জরিপের প্রাককলনের আবশ্যক হয়। আসলে জরিপের সাহায্যে যে ফলাফল পাওয়া যায় তা হচ্ছে প্রাককলিত পরিমাপ। আমরা জানি, বিভিন্ন দিকের প্রতি লক্ষ রেখেই শুমারি জরিপের পরিবর্তে নমুনা জরিপ করা হয়ে থাকে। শুমারি জরিপের সাহায্যে তথ্যের সব বৈশিষ্ট্যগুলো জানা সম্ভব হয়। কিন্তু নমুনা জরিপের ক্ষেত্রে প্রাককলন তথ্য নিয়ে কাজ করতে হয়। প্রাককলন যেহেতু সত্যিকারের পরিমাপ নয় সেহেতু প্রাককলন একটি বিশেষ প্রকারের ত্রুটিযুক্ত হয় এবং এই ত্রুটিকে বলা হয় নমুনা বিচ্যুতি।
সবসময় নমুনা গড় এবং সমগ্রক গড় হুবহু একই সংখ্যা নাও হতে পারে। আমরা জানি যে, একটি নির্দিষ্ট গড় সম্বলিত সমগ্রক হতে উপর্যুপরিভাবে নমুনা নির্বাচন করলে আমরা বিভিন্ন মানের নমনা গড় পেতে পারি। অর্থাৎ সমগ্রক গড় এক থাকা সত্ত্বেও সমগ্রক হতে ভিন্ন ভিন্ন নির্বাচিত নমুনা এককের গড় ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় হয়। নমুনা গড়ের এই বৈশিষ্ট্যকে নমুনার তারতম্য বলা হয়। শুমারি জরিপের ক্ষেত্রে আমরা বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে সত্যিকার পরিচয় পাই এবং এক্ষেত্রে নমুনার তারতম্য পরিলক্ষিত হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না, যদিও এক্ষেত্রে অনমুনাজ বিচ্যুতি থেকে যায়।
আরও পড়ুন: সম্ভাবনা নমুনায়ন কি?
নমুনা বিচ্যুতি এবং অ-নমুনাজ বিচ্যুতির মধ্যে পার্থক্য হল যে, নমুনা জরিপ এবং শুমারি জরিপ দুই ক্ষেত্রেই অ-নমুনাজ বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হয়। অন্যদিকে নমুনা বিচ্যুতি শুধুমাত্র নমুনা জরিপের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। এটা সর্বতোভাবে তথ্য যে, নমুনা জরিপের নমূনা বিচ্যুতি থাকবেই এবং এক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ মনোযোগ হলো নমুনা উদ্ভূত বিচ্যুতি সম্বন্ধে জ্ঞাত হওয়া।
নমুনার তারতম্য পরিমাপ করার জন্য যে প্রক্রিয়াটি সাধারণত ব্যবহার করা হয় তা হলো পরিমিত বিচ্যুতি (Standard Error)। কোনো নমুনা উদ্ভূত প্রাককলনের পরিমিত বিচ্যুতির সংজ্ঞা হলো সেই প্রাককলনের পরিমিত ব্যবধান। আর নমুনা গড়ের পরিমিত ব্যবধানই গড়ের পরিমিত বিচ্যুতি। পরিমিত বিচ্যুতি হলো নমুন গড় এবং সমগ্রক গড়ের পার্থক্য।
পরিমিত বিচ্যুতি খুব কম হওয়া বাঞ্ছনীয়। নমূনা বিচ্যুতির আয়তন বেশি হলে প্রাককলনের নির্ভরযোগ্যতা হ্রাস পায়। সমগ্রকের অন্তর্ভূক্ত চলকের ভেদ, নমুনার আয়নত এবং নমুনা নকশার উপর পরিমিত বিচ্যুতির আয়নত নির্ভরশীল। অবাধ দৈবচয়িত নমুনা নকশার প্রাককলিত গড়ের নমুনা বিচ্যুতির পরিমাপের সূত্র হলো-
নমুনা গড়ের পরিমিত বিচ্যুতি = σ/√Ν
যেখানে Ν = নমুনার আয়তন
σ = সমগ্রকের বৈশিষ্ট্যের পরিমিত ব্যবধান