যোগান ও সময়ের মধ্যে সম্পর্ক
যোগান বলতে বুঝায়, নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট দামে উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা যে পরিমাণ দ্রব্য বা সেবা বিক্রয়ের জন্য বাজারে উপস্থাপন করেন তা। অন্যদিকে সময় বলতে দিন, ক্ষণকে বুঝায়। যে কোন দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপন করতে হলে সময়ের প্রয়োজন হয়। কোন কোন পণ্য স্বল্প সময়ে যোগন দেওয়া যায়, আবার কোন পণ্যের যোগান দিতে সময় বেশি লাগে।
আলফ্রেড মার্শাল, সময়কে ৪ ভাগে ভাগ করেন। যথা- ১) অতি স্বল্পকাল ২) স্বল্পকাল ৩) দীর্ঘকাল এবং ৪) অতি দীর্ঘকাল
১) অতি স্বল্পকালীন সময়
অতি স্বল্পকালীন সময় হচ্ছে এমন এক সময় যে সময় যোগান কোনভাবেই বৃদ্ধি করা যায় না। কারণ এত কম সময়ে উৎপাদনকারী উৎপাদনের অনেক উপাদানের কোন পরিবর্তন সাধন করতে পারে না। তাই এই সময় দ্রব্যের দাম প্রভাবিত হয় ঐ দ্রব্যের চাহিদা দ্বারা। এতে করে দ্রব্যের দাম বেশি হয়। এই ক্ষেত্রে যোগান রেখা সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক হয়। অর্থাৎ দাম অক্ষে সমান্তরাল হয়।
আরও পড়ুন: একটি কাল্পনিক চাহিদা সূচি থেকে একটি চাহিদা রেখা অংকন
২) স্বল্পকালীন সময়
স্বল্পকালীন সময় হল এমন এক সময় যেখানে উৎপাদনকারী তার স্থির উপাদান সমূহকে নিবড়ভাবে ব্যবহার করে সামান্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে। তবে একথা বলা যায় যে, এই উৎপাদন বৃদ্ধি তত বেশি হয় না। এই ক্ষেত্রে দ্রব্যের দাম চাহিদা দ্বারা প্রভাবিত হয়। তবে তা অতি স্বল্পকালীন সময়ের উৎপাদনের চেয়ে সামান্য বেশি উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়।
৩) দীর্ঘকালীন সময়
দীর্ঘকালীন সময় হচ্ছে এমন এক সময়, যে সময় উৎপাদনকারী তার সকল উপাদান পরিবর্তন করে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে। ফলে যোগানকে চাহিদার সাথে সমন্বয় করা যায়। দ্রব্যের দাম নির্ণয়ে চাহিদা ও যোগান যুগপৎভাবে সমভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে দাম সাধারণত স্বল্পকালীন সময়ের চেয়ে কম হয়।
৪) অতি দীর্ঘকালীন সময়
অতি দীর্ঘ কালীন সময় হচ্ছে এমন এক দীর্ঘ সময় যেখানে সকল উপাদানের পরিবর্তন সম্ভব হয়। এই ক্ষেত্রে দাম নির্ণয়ে চাহিদার চেয়ে যোগানের ভূমিকা বেশি হয়। তাই যোগন রেখা ভূমি অক্ষের সাথে সমান্তরাল হয়। এ ধরনের যোগান রেখাকে সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক যোগান রেখা বলে।