Home » উন্নয়নশীল দেশের সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক আলোচনা কর

উন্নয়নশীল দেশের সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক আলোচনা কর

by TRI

উন্নয়নশীল দেশের সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক

উন্নয়নশীল বিশ্বের Praetorian Army কোথাও বা আদর্শগতভাবে নিজেদেরকে পেশাদারী ধারণা অনুযায়ী রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন সরকারের আমলা মনে করে। আবার কোথাও স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক ভূমিকাকে সঙ্গত বলে দাবী করে। নিচে উন্নয়নশীল দেশের সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক আলোচনা করা হলো-

১. Expertness

 এরা দক্ষ এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হয়। এরা নিজ কার্য অর্থাৎ প্রতিরক্ষা বিষয়ে দক্ষতার অধিকারী হয়।বহিঃশত্রুর হাত থেকে দেশকে রক্ষায় সচেষ্ট। পাশাপাশি এরা দেশে Violence Manage –এ দক্ষ থাকে। তাই উন্নয়নশীল দেশে সামরিক হস্তক্ষেপ হয়। 

২. Subjective Control

উন্নয়নশীল দেশের এ ধরণের সম্পর্কে বেসামরিক সরকারের সামরিক বাহিনীর উপর Subjective control থাকে। তবে তাদের নিয়ন্ত্রনের জন্য বেসামরিক সরকার বিশেষ কৌশল তৈরি করে পদ্ধতি অবলম্বন করে।

৩. Mission

Praetorian Army’র মিশন থাকে অভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক দুটোয়। এরা প্রতিরক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীন আইন শৃঙ্খলাতেও তাদের প্রভাব বিস্তার করে।

আরও পড়ুন:   সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক কি? সামরিক-বেসামরিক সম্পর্কের প্রকারভেদ

৪. Loyality

উন্নয়নশীল বিশ্বের Army কখনোই নিজের মক্কেল অর্থাৎ রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত নয়। সে নিজেকে রাষ্ট্রের রক্ষক বা অভিভাবক ভাবে। ফলে রাষ্ট্রের প্রতি তাদের আনুগত্য থাকে না।

৫. বেসামরিক কর্তৃত্ব মানে না

উন্নয়নশীল দেশসমূহের সামরিক-বেসামরিক সম্পর্কের প্রকৃতিতে সামরিক বাহিনী বেসামরিক সরকারের কর্তৃত্ব মেনে নিতে চায় না। এরা নিজেদেরকে বেসামরিক সরকারের চাইতে যোগ্য মনে করে। তাই তারা বেসামরিক সরকারের নির্দেশমত কাজ করতে চায়না।

৬. একতাবদ্ধ নয়

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে Praetorian Army Factional হয়। এদের মধ্যে একতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে একতাবদ্ধ হয়।

৭. Non-Mobilized

এই ধরনের সেনাবাহিনী Non-Mobilized Organization জনগণকে সমন্বিত করা এদের কাজ নয়। এরা নিজেদের পেশার প্রতি নির্দিষ্ট থাকে।

৮. Corporate Interest

উন্নয়নশীল দেশসমূহে সামরিক বাহিনী একটা Corporate Group এদের নিজস্ব কিছু স্বার্থ থাকে। তারা সব সময় তাদের স্বার্থ আদায়ে সচেষ্ট থাকে। যদি তাদের স্বার্থে আঘাত লাগে তাহলে তারা সরকার বিরোধী অভিযান চালায়। সামরিক অভ্যুত্থান ঘটায়।

৯. আমলাতান্ত্রিকতা

রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সরকারের বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান থাকে। তেমনি একটা আমলাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হলো সেনাবাহিনী। Praetorian বাহিনী আদর্শগত ভাবে নিজেদেরকে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন সরকারের আমলাতান্ত্রিক এজেন্ট বলে মনে করে। কোথাও বা আবার রাজনৈতিক ভূমিকাকে সঙ্গত বলে দাবী করে। Praetorian দের নিজস্ব আমলাতান্ত্রিক কাঠামো থাকে।

১০. জবাবদিহিতা

Praetorian সেনাবাহিনী নিজেদের দায়িত্বের প্রতি সচেতন। তবে তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজের জবাবদিহিতা কর্তৃপক্ষকে দিতে নারাজ।

১১. নিরপেক্ষহীনতা

উন্নয়নশীল বিশ্বের সামরিক বাহিনী নিরপেক্ষ নয়। তারা রাষ্ট্রের বিশেষ শ্রেণীর স্বার্থে কাজ করে। এতে কখনো সরকারের ভালো আবার কখনও সরকার বিরোধী হয়। অর্থাৎ Praetorian Army নিজেদের স্বার্থে বিশেষ শ্রেণীর সাথে কাজ করে। তাই তারা নিরপেক্ষ নয়।

  উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, ১৯৫০ ও ৬০- এর দশকে বিশ্বের যেসকল দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে ঐ রাষ্ট্রগুলোতে সেনাবাহিনীর উপর রাজনৈতিক ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণের সনাতন তত্ত্বগুলি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। কারণ এই সকল দেশ স্বাধীনতা লাভের পর পরই সামরিক শাসনের আবর্তে নিপাতিত হয়েছে। আর নিপাতিত সকল দেশের আর্মিই Praetorian Army। অপর পক্ষে পুঁজিবাদী বিশ্বের সামরিক বাহিনী হল পেশাদার সামরিক বাহিনী। সামরিক বাহিনী কখনো সামরিক দক্ষতার সাহায্যে রাজনীতি করতে পারে না। কারণ রাজনৈতিক সমাজ একটি সেনা সংগঠন অপেক্ষা অনেক জটিল। তাই যথার্থই বলা যায় রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ সামরিক-বেসামরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জটিল সমস্যার সৃষ্টি করে। অপর দিকে সামরিক-বেসামরিক সুসম্পর্ক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।

Related Posts