Home » রুশ বিপ্লব কী? রুশ বিপ্লবের কারণগুলো আলোচনা কর

রুশ বিপ্লব কী? রুশ বিপ্লবের কারণগুলো আলোচনা কর

by TRI

রুশ বিপ্লব

বলশেভিক বিপ্লব এবং অক্টোবর বিপ্লবের সমন্বিত রূপ হচ্ছে রুশ বিপ্লব। ১৯১৭ সালের ৮ মার্চ নারী দিবস উপলক্ষে নারীদের অধিকার আদায়ের দাবিতে শুরু হয় এই আন্দোলন। তার পর দিনই শ্রমিক ও কৃষকেরা যোগ দেন এই আন্দোলনে। এবং পেত্রোগ্রাদ দখলের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রুশ বিপ্লব। মার্চের এই গণঅভ্যুত্থানের মুখে সিংহাসন ত্যাগ করেন জার। এরপর একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির বুর্জোয়া সরকার গঠিত হয়। কিন্তু উক্ত সরকারের ঘোষিত কর্মসূচিতে রাশিয়ার কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণীর ভাগ্য বদলের সম্পর্ক না থাকায় বিপ্লব চলতে থাকে। যা পরিপূর্ণতা পায় অক্টোবরে লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টির ক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যমে। এজন্য রুশ বিপ্লবকে অক্টোবর বিপ্লব বা বলশেভিক বিপ্লবও বলা হয়।

আরও পড়ুন:  ডাইরেক্টরি শাসন ব্যবস্থা কী?

রুশ বিপ্লবের কারণ

১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের কারণগুলো নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

১। কোলাক ও জমিদারদের আধিপত্য

গ্রামাঞ্চলে কোলাক অর্থাৎ মধ্যস্বত্বভোগী এবং জমিদাররা কৃষকদের শাসন ও শোষণ করতো। কৃষকরা তাদের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তি লাভের আশায় আন্দোলনে যোগ দেয়।

২। কৃষক অসন্তোষ

অনবরত কর প্রদানের ফলে কৃষকদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠে। কৃষকরা জার সরকারের তাঁবেদারদের হাতে শোষিত হতে থাকে। তাই কৃষক অসন্তোষ বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকেরা বিদ্রোহে যোগ দেয়।

৩। শ্রমিক অসন্তোষ

শিল্পাঞ্চলগুলোতে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনার জন্য বিভিন্ন সভা ও ধর্মঘট আহ্বান করতে থাকে। শ্রমিক অসন্তোষ ক্রমে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে গণ বিদ্রোহে রুপ নেয়।

৪। জার সরকারের উৎপীড়ন, দমননীতি ও নির্যাতন

জার সরকারের ক্রমাগত উৎপীড়ন, দমননীতি ও নির্যাতনের ফলে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। তারা তাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া সম্পর্কে সজাগ হয়ে উঠে। ফলে বলশেভিক দলের নেতৃত্বে তারা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে ১৯১৭ সালে অক্টোবর বিপ্লব সংঘটিত হয়।

৫। বেকারত্ব

জার সরকারের শাসনামলে দেশে বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এ সময় বুর্জোয়া শ্রেণী নিজেদের মুনাফা বৃদ্ধি করার জন্য প্রচুর শ্রমিক ছাঁটাই শুরু করে। ফলে অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। এই বেকার শ্রমিক শ্রেণী নিজেদের অবস্থা পরিবর্তনের আশায় আন্দোলনে যোগ দেয়।

৬। দুর্নীতিপরায়ণ প্রশাসন

জারের শাসনামলে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি এমনভাবে গেঁড়ে বসে যে প্রচলিত অবস্থায় এর প্রতিকারের উপায় আর ছিল না।

৭। শ্রম ও পুঁজির দ্বন্দ্ব

এ সময় শ্রম ও পুঁজির দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। মালিক শ্রেণী শিল্প কারখানাতে শ্রমিকদের অল্প বেতনে খাটিয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করতো। এর ফলে শ্রমিকদের মধ্যে শ্রম ও পুঁজির দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

Related Posts